Sunday, May 10, 2020

আমাদের সাক্ষাৎ জ্যান্ত দুর্গা মা আনন্দময়ীঃ শুভ আবির্ভাবতিথি

বনেদীয়ানা'র শ্রদ্ধার্ঘ্য
  আজ ২৮বৈশাখ,১৪২৭ জ্যোতির্ময়ী শ্রীশ্রীআনন্দময়ী মায়ের ১২৫তম আবির্ভাবতিথি। বনেদীয়ানা পরিবারের সকল সদস্যদের পক্ষথেকে শ্রীশ্রীমায়ের চরণে শতকোটি প্রণাম ও শ্রদ্ধা জানালাম। মায়ের সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রদান করলাম, লিখলেন শুভদীপ। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন আর প্রশাসনের সাথে সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করুন।

 আমাদের সাক্ষাৎ জ্যান্ত দুর্গা মা আনন্দময়ীঃ- শুভ আবির্ভাবতিথি
১৮৯৬সালে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার খেওড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মা আনন্দময়ী। আনন্দময়ী মায়ের প্রকৃত নাম নির্মলা সুন্দরী, তিনি দাক্ষায়ণী, কমলা বা বিমলা নামেও সমাধিক প্রসিদ্ধ ছিলেন। ১৯০৮সালে রমণীমোহন চক্রবর্তীর সাথে বিবাহ হয় তাঁর, স্বামী পরবর্তীকালে সন্ন্যাস গ্রহণ করে ভোলানাথ নামে পরিচিত হন। ১৯২৪ সালে ঢাকার নবাবের বাগানের তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে রমণীমোহন নিযুক্ত হলে নির্মলা সুন্দরীও তাঁর সঙ্গে চলে আসেন ও সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির(১৯২৬) প্রতিষ্ঠা করেন। সেই মন্দিরেই একদিন দিব্যভাবে মাতোয়ারা নির্মলা আনন্দময়ী মূর্তিতে প্রকাশিত হন তখন থেকেই তিনি সকলের মা আনন্দময়ী।
 আনন্দময়ী মায়ের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী, সুভাষচন্দ্র বসু, কমলা নেহরু, পরমহংস যোগানন্দ থেকে শুরু করে বহু খ্যাতনামা ব্যক্তি। মায়ের শিষ্যত্ব গ্রহণ করে তাঁরা আরও খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছেছিলেন।
 প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য আনন্দময়ী মায়ের মধ্যে ছোটোবেলা থেকেই দৈবশক্তির প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল, তিনি হরিনামকীর্তন শুনে আত্মহারা হয়ে যেতেন। উল্লেখ্য তিনি তাঁর স্বামীকে দীক্ষাদান করেছিলেন। আনন্দময়ী মায়ের শিষ্যদের মধ্যে তাঁর স্বামীও রয়েছেন। ১৯৩২ সালে আনন্দময়ী মা  স্বামীর সঙ্গে উত্তরভারতের দেরাদুনে চলে যান এবং সেখানে তাঁর লীলাক্ষেত্র সম্প্রসারিত হয়। মা আনন্দময়ী সকল ভক্তের কাছে সাক্ষাৎ জ্যান্ত দুর্গা। তাঁর বিশেষ কীর্তি হল প্রাচীন ভারতের শ্রেষ্ঠ তীর্থস্থান নৈমিষারণ্যের পুনর্জাগরণ ঘটানো। সেখানে গিয়ে তিনি নতুন করে মন্দির স্থাপন করে যজ্ঞ, কীর্তন, নাচ-গান ইত্যাদির মাধ্যমে ভগবৎসাধনার ক্ষেত্র তৈরি করেন।
 আনন্দময়ী মা ছিলেন একজন সমাজশ্রষ্টা। তিনি সকল জীবকেই সন্তানজ্ঞানে ভালোবাসতেন। মা আনন্দময়ী ছিলেন ভগবৎপ্রেমী, তাই ভারতের জনগনকে ভগবৎপ্রেমী করার কাজে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন। আজ তাঁর আবির্ভাবতিথি উপলক্ষে আমাদের প্রণাম ও শ্রদ্ধা রইল।
#আনন্দময়ীমা  #বনেদীয়ানা
#AnandamoyeeMaa #Bonediyana

Wednesday, May 6, 2020

অজ বুদ্ধ পূর্ণিমা- পুণ্যভূমি সারনাথ

বুদ্ধ পূর্ণিমাতিথি
 আজ ২৪ বৈশাখ,১৪২৭ বুদ্ধ পূর্ণিমা। ভগবান বুদ্ধের আবির্ভাবতিথি, বুদ্ধাব্দ ২৫৬৪বর্ষ আরম্ভ, আজ আমরা বারাণসী থেকে ১৩কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকের বৌদ্ধ তীর্থস্থান সারনাথের সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য প্রদান করছি, লিখলেন শুভদীপ। মূলত এই সারনাথের উদ্যানেই প্রথম ভগবান বুদ্ধের ধর্ম সম্পর্কিত বানীসমূহের উন্মেষ ঘটে। আজ সেই পুণ্যভূমির সংক্ষিপ্ত ইতিহাসই তুলে ধরবো, দেখা যাক সেই ইতিহাস।

 আজ বুদ্ধ পূর্ণিমাঃ- পুণ্যভূমি সারনাথ
মূলত বুদ্ধ ছিলেন বাস্তবধর্মী সংস্কারক। মানবজাতির জাগতিক দুঃখকষ্ট থেকে মুক্তিদান করাই ছিল গৌতম বুদ্ধের একমাত্র উদ্দেশ্য। কর্মফল ও তার পরিণাম 'দুঃখ' সম্পর্কে গৌতম বুদ্ধের চারটি আর্যসত্য রয়েছে- ১. সংসারে দুঃখ কষ্ট রয়েছে। ২. এই দুঃখকষ্টের কারণও রয়েছে। ৩. মানুষের দুঃখকষ্ট লাঘবের উপায় হল তৃতীয় সত্য। ৪. দুঃখকষ্ট অবসান করার সত্যপথ জানতে হবে।
আমরা সকলেই ছাত্রাবস্থায় ইতিহাস বিভাগের একটা অন্যতম বিষয় অধ্যায়ন করে থাকি তা হল গৌতম বুদ্ধের বাণী সমূহ। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল অষ্টাঙ্গিক মার্গ, কেন এই আটটি নির্দেশ দিয়েছিলেন গৌতম বুদ্ধ? কারনন তিনি মনে করেন কামনা, বাসনা, তৃষ্ণা, আসক্তি ইত্যাদি থেকেই দুঃখকষ্ট সৃষ্টি হয় তাই সেই দুঃখকষ্ট থেকে বাঁচার জন্য তিনি এই নির্দেশ দিয়েছিলেন। ১. সৎবাক্য,২. সৎকার্য,৩. সৎজীবন,৪. সৎচেষ্টা,৫. সৎচেতনা,৬. সৎচিন্তা,৭. সৎসংকল্প এবং ৮. সৎদর্শন, এই হল বুদ্ধের আটটি নির্দেশ। তিনি হিংসা, ব্যভিচার, মদ্যপা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকার নির্দেশও দিয়েছিলেন।

 গৌতম বুদ্ধ খ্রিষ্টপূর্ব ৬২৩অব্দে নেপালের কপিলাবস্তুর লুম্বিনী কাননে জন্মগ্রহণ করেন। গৌতম বুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত তীর্থস্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল লুম্বিনী, বুদ্ধগয়া, সারনাথ, কুশিনগর, রাজগৃহ, কপিলাবস্তু, শ্রাবস্তী, নালন্দা, বৈশালী ইত্যাদি। গৌতম বুদ্ধ তাঁর বুদ্ধত্ব লাভ করবার পর নবলব্ধ ধর্ম প্রথম প্রচার করেছিলেন সারনাথে। বুদ্ধের সময়কালে সারনাথ কাশী রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। মূলত বারাণসী শহরের অনতিদূরে বরুণা নদীর তীরে অবস্থিত। প্রাচীনকালে স্থানটি 'ইসিপতন মৃগদাব' নামে পরিচিত। এই স্থানেই গৌতম বুদ্ধ তাঁর পঞ্চবর্গীয় শিষ্যদের কাছে প্রথম ধর্মপ্রচার করেছিলেন। তাঁরা হলেন কৌন্ডিন্য, বপ্প, ভদ্দীয়, মহানাম ও অশ্বজিৎ। বুদ্ধের প্রথম ধর্মপ্রচারের স্থান হিসাবে সারনাথ মহাতীর্থের স্থান লাভ করেছে।
 ধর্মদর্শন ছাড়াও সারনাথ গুরুত্বপূর্ণ। পঞ্চবর্গীয় শিষ্যদের ধর্ম দেশনা করার পর বারাণসীর শ্রেষ্ঠীপুত্র যশ ও তাঁর চুয়ান্নজন বুদ্ধকে এ স্থানে প্রব্রজ্যা দিয়েছিলেন। এই মোট ষাটজন ভিক্ষু নিয়ে প্রথম ভিক্ষুসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। সারনাথ বৌদ্ধ ধর্মের প্রাণকেন্দ্র, এখানে শতশত ভিক্ষু-ভিক্ষুণী এসে বসবাস করতেন। ধর্মচক্র প্রবর্তনের স্মারক হিসাবে সম্রাট অশোক এখানে স্তূপ নির্মাণ করেছিলেন। স্তূপটি পাথরের তৈরি। এর উচ্চতা ১৪৫ফুট ও প্রস্থ ৯৪ফুট। চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং এই স্তূপটি দেখেছিলেন। সারনাথে ৭১ফুট উঁচু ও ৩ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট বেলে পাথরের একটি স্তম্ভ আছে। স্তম্ভটির মাথায় চারমুখ বিশিষ্ট সিংহমূর্তি আছে। তার ওপর ধর্মচক্র আছে। চক্রটি সাম্য, মৈত্রী, শান্তি ও প্রগতীর প্রতীকরূপে ভারতীয় জাতীয় পতাকায় স্থান পেয়েছে। স্তম্ভটি ভেঙে যাওয়ায় সিংহমূর্তিটি সারনাথের সংগ্রহশালায় আছে।
 প্রসঙ্গত সারনাথে প্রাচীন বৌদ্ধ সভ্যতার অনন্য নিদর্শন বহু বিহার, স্তূপ ও স্তম্ভের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। ভারতীয় ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য স্থান হিসাবে পরিচিত এই সারনাথ।

তথ্য সংগ্রহেঃ শুভদীপ রায় চৌধুরী
চিত্রঋণঃ লেখক ও অন্যান্য
#বুদ্ধপূর্ণিমা #সারনাথ #বারাণসী
#বনেদীয়ানা #ভারতীয়ইতিহাস
#BuddhaPurnima #Sarnath #Baranashi #Bonediyana #IndianHistory

Tuesday, May 5, 2020

ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রা উৎসব- রানী রাসমণি দেবীর প্রতিষ্ঠিত

ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রাঃ
  গতপর্বে বনেদিয়ানা প্রকাশ করেছিল তিন প্রাচীন রথযাত্রার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। আজও প্রকাশিত হল কলকাতার এক ঐতিহ্যবাহী স্বনামখ্যাত পরিবারের রথযাত্রা উৎসব, লিখলেন শুভদীপ। এই রথযাত্রা বর্তমানে রাসমণি দেবীর প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণেশ্বরের মা ভবতারিণী কালীমন্দিরে মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হয়। আভিজাত্যে আজও অটুট এই রথযাত্রা। আপনাদের অনুরোধ আপনারা এখন বাড়িতে থাকুন আর সুস্থ থাকুন। ইতিহাসের সাথে থাকুন আর বনেদীয়ানা র প্রকাশিত প্রবন্ধ কেমন লাগছে অবশ্যই জানাবেন আমাদের। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক সেই প্রাচীন ঐতিহ্য ও রীতিনীতির কথা।

রানী রাসমণি বাড়ির রথযাত্রাঃ
  কলকাতার স্বনামখ্যাত পরিবারের মধ্যে অন্যতম জানবাজারের রানী রাসমণির বাড়ি, পরিবারের প্রাচীন দুর্গাপুজো যা আজও তিলোত্তমার গৌরব এবং ঐতিহ্যকে বহন করে। রানী রাসমণিদেবীর ঐতিহ্যময় সৃষ্টি- দক্ষিণেশ্বর শ্রীশ্রী ভবতারিণী কালীমন্দির, যা আজ বিশ্বের সকল মাতৃভক্তদের কাছে সমাদৃত।
 মূলত রাসমণি দেবী শাক্ত আরাধনা করলেও, তিনি পিতৃসূত্রে বৈষ্ণবভাবাপন্ন ছিলেন এবং শ্বশুরালয়েও 'রঘুনাথজীউ' পরবর্তীকালে গৃহদেবতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হন। স্বামী রাজচন্দ্র দাসের জীবদ্দশায় বাড়িতে দোল উৎসব, দুর্গাপুজো প্রভৃতি অনুষ্ঠান মহাসমারহে হলেও রথযাত্রা হতনা। স্বামীর মৃত্যুর পর রাসমণি দেবী রথযাত্রা উৎসব করতে এবং সেই রথে গৃহদেবতা শ্রীশ্রীরঘুনাথ জীউ'কে বসাতে মনস্থ করেন। ১৮৩৮ খ্রীষ্টাব্দে রাসমণিদেবী প্রথম রথযাত্রা উপলক্ষে রথনির্মাণ করেন সওয়া লক্ষ টাকা ব্যয় করে এবং ধুমধাম করে রথযাত্রা উৎসব পালন করেন।
 বাংলার নানান স্থানে নানাপ্রকার রথ হত, কিন্তু রাসমণি দেবীর ইচ্ছানুযায়ী, সেই বাড়িতে কাঠের পরিবর্তে রূপোর রথ তৈরি হল। কলকাতার অভিজাত পরিবারের কাছে বিলাতি জহুরী হিসাবে হ্যামিল্টন কোম্পানির তখন খুবই খ্যাতি। রাসমণির জামাতা মথুরমোহন বিশ্বাসের ইচ্ছা ছিল সেই বিদেশী কোম্পানিকে দিয়েই তৈরি করাবেন দামি রূপোর রথ। কিন্তু তাঁর জ্যেষ্ঠ জামাতা রামচন্দ্র দাসের পরামর্শ অনুযায়ী রাসমণি দেবী দেশি কারিগর দিয়েই রথ তৈরি করালেন। সিঁথি, ভবানীপুর প্রভৃতি স্থান থেকে যোগ্য কারিগর নিয়ে এসে বাড়িতেই তৈরি হল রূপোর রথ।
 রাসমণিদেবী প্রতিবছরই ধুমধাম করে রথযাত্রা উৎসব পালন করতেন। রথযাত্রার সময় ঢাক, ঢোল, সানাই, বাঁশি, জগঝম্প প্রভৃতি নানান বাজনা আনতেন। বাজনা ও কীর্তনের দল রথের পেছনে পেছনে যেত। লোকে দলে দলে আসতেন 'রানীর রথ' দেখতে। রানী রাসমণি দেবীর রথযাত্র উপলক্ষে প্রায় ৮/১০হাজার টাকা খরচ হত। একবার তিনি এই উৎসব দেখার জন্য সাহেবদেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
  উল্লেখ্য প্রবোধচন্দ্র সাঁতরা তাঁর গ্রন্থে লিখেছেন যে, স্নানযাত্রার দিন মহাধুমধামে রথ প্রতিষ্ঠা হল। রহু ব্রাহ্মণ ভোজন ও বিদায় দেওয়া হল। মোট ১,২২,১১৫ টাকা ব্যয় হল। মহা সমারহে মহানগরী কলকাতায় জনসাধারণের সামনে এলো রৌপ্যময় রথ। এছাড়াও লিখেছেন, 'গোযানে রৌশনচৌকি, সানাই, ঢাক, ঢোল, নাকাড়া ইত্যাদি শতাধিক বাদ্যকরগণ শব্দে মুখরিত করত। বাউলের দল, যাত্রার দল, বালক সঙ্গীতের দল, সঙ্কীর্তন সম্প্রদায়, নানাবিধ রঙ তামাসা, বাগবাজারের সখের নামগান এছাড়া নামজাদা দোহারগণ আসতেন রানী রাসমণির রথযাত্রায়। রথযাত্রা উপলক্ষে প্রতিবছর ২থেকে ৩মণ যুঁই ফুলের মালা কেনা হত। তারপর রথের সামনে রানীর গুরুদেব এবং জামাতারা একসাথে চলতেন। তাঁদের পেছনে থাকতেন নায়েব, দেওয়ান, সরকার, গোমস্তা এবং সঙ্গে সঙ্গে দাসদাসীগণ। প্রায় ৪/৫ শত লোক রথরজ্জু ধরে রথ বহন করত এবং রথে আসীন হতেন শ্রীশ্রীরঘুনাথ জীউ। বলা যেতে পারে মহাসমারহে নিষ্ঠার সাথে পালিত হত রানী রাসমণির রথযাত্রা উৎসব।
 একবছর রানী শহরের সম্ভ্রান্ত সাহেবদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তারা দেখে বলেছিলেন, 'Our eyes never met such a gorgeous, pompous extraordinary Occasion like this....'  উল্লেখ্য রাসমণি দেবীর দেহত্যাগের পর তাঁর সেই রূপোর রথ তাঁর অন্যতম দৌহিত্র ত্রৈলোক্যনাথ বিশ্বাস (শ্রীশ্রীজগদম্বাদেবী ও মথুরমোহন বিশ্বাসের দ্বিতীয়পুত্র) নিজের বাড়ির অংশে রাখেন। ১৮৮১ সালে রাসমণির আরেক দৌহিত্র বলরাম দাস(পদ্মমণি ও রামচন্দ্র দাসের দ্বিতীয়পুত্র) ২৯৪নং মামলায় রথ ও দেবোত্তর সম্পত্তির বিষয়ে মামলা করেন। ১৯০১ সালে রথের মামলার নিষ্পত্তি হয় ও ঐ বছর প্রথম রথের পালা বলরাম দাস পান। রাসমণি দেবীর পাঁচজন দৌহিত্রের মধ্যে পালা করে রথযাত্রা হত। ১৯১০সালে রূপোর রথের শোচনীয় অবস্থা দেখে বলরাম দাস সকল অংশীদারগণকে রথটি ভেঙে নতুন রথ তৈরির আহ্বান জানান কিন্তু কেউ সেই বিষয়ে সাড়া না দেওয়ায় একমাত্র অমৃতদাস ও বলরাম দাস দুজনে মিলে ৭০ হাজার টাকা ব্যয় করে পুরানো রথের মতনই নতুন রথ নির্মাণ করেন ও নিজেরাই তাঁদের নিজ গৃহদেবতা শ্রীশ্রীবামনদেব জীউকে বসিয়ে রথযাত্রা উৎসব পালন করতে শুরু করেন। এইসময়ে রাসমণি দেবীর রথের সাথে এই রথও বার হত। পরবর্তীকালে এই রথটিও ভগ্নদশা হলে রথযাত্র উৎসব বন্ধ হয়ে যায় ও রাসমণি দেবীর রূপোর রথটি বর্তমানে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে আছে। আজও সেই প্রাচীন ঐতিহ্য ও রীতিনীতি মেনে রথযাত্রা উৎসব হয় দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরে।
  ****আপনারাও যদি আরও কিছু তথ্য জানেন তাহলে অবশ্যই কমেন্টস করবেন আমরা পরবর্তী সময়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।****
 কৃতজ্ঞতাস্বীকারঃ 'রানী রাসমণির জীবনবৃত্তান্ত', নির্মলকুমার রায়
 চিত্রঋণঃরানী রাসমণি  পরিবারের সদস্য
#রানীরাসমণিররথযাত্রা
#রথযাত্রাউৎসব
#বনেদীয়ানা
#RaniRashmoniRathayatra
#RathaYatra
#Bonediyana

Saturday, May 2, 2020

প্রভু শ্রীশ্রী জগদ্বন্ধু সুন্দরের আবির্ভাবতিথি- প্রণাম শ্রীচরণে

বনেদীয়ানা'র শ্রদ্ধার্ঘ্য
 আজ বনেদীয়ানা'য় আরও এক শ্রদ্ধাঞ্জলিপর্ব প্রকাশিত হল, সকালে প্রকাশিত হয়েছে সর্বকালের সেরা চিত্রপরিচালক শ্রী সত্যজিৎ রায়'র প্রতি এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন। এখন প্রকাশিত হল শ্রী শ্রী প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের ১৫০তম আবির্ভাবতিথি সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিবেদন, লিখলেন শুভদীপ। বনেদীয়ানা পরিবারের পক্ষথেকে প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের শ্রীচরণে প্রণাম ও শ্রদ্ধা জানাই।

প্রভু শ্রীশ্রী জগদ্বন্ধু সুন্দরের ১৫০তম আবির্ভাবতিথিঃ বনেদীয়ানা
  আজ বনেদীয়ানা পরিবার প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের আবির্ভাব উপলক্ষে মুর্শিদাবাদ জেলার ডাহাপাড়া ধামের কিছু স্মৃতিকথা প্রকাশিত হল। মুর্শিদাবাদ জেলার সর্বোচ্চ মন্দির এই জগদ্বন্ধু আশ্রম, বহুল পরিচিত হাজারদুয়ারি থেকে প্রায় সাত কিমি উত্তর-পঞ্চিমদিকে ভাগীরথীর অপরপ্রান্তেই অবস্থিত এই আশ্রম। ২০০০-০৩ সালে নির্মাণ করা হয় এই ১১৮ফুট উঁচু মন্দিরটি।
   প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দর ছিলেন বৈষ্ণব ধর্মগুরু এবং একই সঙ্গে সমাজসংস্কারক ও লেখক। তাঁর জন্ম মুর্শিদাবাদ জেলার ডাহাপাড়ায় পিতা শ্রী দীননাথ ন্যায়রত্ন ও মাতা বামাসুন্দরী দেবীর ঘরে। তাঁদের পৈতৃক নিবাস ছিল বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে। প্রচলিত লোককথায়, নদীয়া থেকে শ্রীচৈতন্যদেব শ্রীহট্ট যাত্রা করার সময় প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের পূর্বপুরুষ বাসুদেব চক্রবর্তীর গৃহে তিনি অবস্থান করেছিলেন। বাসুদেব চক্রবর্তীর উত্তরপুরুষ রামনারায়ণ চক্রবর্তী, রামনারায়ণের দুই পুত্র, যথাক্রমে কৃষ্ণমঙ্গল ও কৃষ্ণকমল। কৃষ্ণমঙ্গলের পুত্রের নাম শম্ভুনাথ। এই শম্ভুনাথের চারপুত্র ও দুই কন্যা। পুত্ররা হলেন হবানন্দ, বাণীকণ্ঠ, ভৈরব এবং দীননাথ এবং কন্যাদ্বয় হলেন হরসুন্দরী ও কাশীশ্বরী। আর কৃষ্ণকমলের একমাত্র পুত্র ছিল, আরাধন।
  আরাধন বিবাহিত হলেও সংসারের প্রতি উদাসীন ছিলেন। তাঁর ভক্তিভাবে সন্তুষ্ট হয়ে মুর্শিদাবাদের বড়নগরের রানী ভবানীর দত্তকপুত্র সাধক রামকৃষ্ণ আরাধনকে তাঁর সভাপণ্ডিত করেন। এদিকে আরাধনকে সংসারে ফেরার জন্য শম্ভুনাথ তাঁর পুত্র দীননাথকে দেন আরাধনের হাতে। এর কিছুকাল পরেই আরাধন তাঁর ভ্রাতৃপুত্র দীননাথ ও কুলদেবতা শ্রীশ্রীরাধাগোবিন্দকে নিয়ে মুর্শিদাবাদে গঙ্গারতীরে(ডাহাপাড়ায়) আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।
 উল্লেখ্য আরাধন পণ্ডিতের মৃত্যুর পর দীননাথ পৈতৃক নিবাস গোবিন্দপুরে ফিরে যান ও বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়েছিলেন। সেখানে ১২৬৯সালে(বাংলা) গুরুচরণ নামে এক পুত্র ও ১২৭২সালে(বাংলা) কৈলাসকামিনী নামে এক কন্যালাভ করেন। কিন্তু মাত্র আটবছর বয়েসে গুরুচরণ মারা গেলে তিনি কন্যা ও স্ত্রীকে নিয়ে মুর্শিদাবাদের ডাহাপাড়ায় ফিরে আসেন দীননাথ। সেখানে পূর্বপ্রতিষ্ঠিত রাধাগোবিন্দ কুঞ্জ সংস্কার করে পূজা ও অধ্যাপনার কাজে মনোনিবেশ করেন।
  প্রসঙ্গত তিনি ডাহাপাড়ার বঙ্গাধিকারী ব্রজেন্দ্র নারায়ণ রায়ের সভাপতি হন। প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের মহাপ্রয়াণের পর থেকে তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ও লীলাসঙ্গী আচার্য শ্রীপাদ মহেন্দ্রজী শ্রীঅঙ্গনে মহানাম সম্প্রদায় গঠন করেন। প্রভুর কৃপা নির্দেশে গঠিত এ মহানাম সম্প্রদায় বিশ্বকল্যাণার্থে বাংলা ১৩২৮সালে অখণ্ড মহানাম কীর্তন শুরু করেছেন, যা আজও অব্যহত। আজ গোটা বিশ্ব শ্রীশ্রী জগদ্বন্ধু সুন্দরের মহানাম কীর্তনে মতে উঠেছে। মহেন্দ্রজী কিছু সময়ের জন্য শ্রীমৎ কুঞ্জদাসকে স্বতন্ত্র প্রচারের দায়িত্ব দেন।
 পরবর্তীকালে কুঞ্জদাস আরও কয়েকজন বান্ধব নিয়ে মুর্শিদাবাদের ডাহাপাড়ায় প্রভু সুন্দরের জন্মভিটায় ন্যায়রত্নের শ্রীশ্রীরাধাগোবিন্দের কুঞ্জ সংস্কার করেন এবং নিয়মিত মহানাম ও প্রভু সুন্দরের জন্মোৎসব পালন করেন মহাসমারহে। তিনি ছিলেন মানবতার মূর্তপ্রতীক, জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে অধিকারবঞ্চিতদের মর্যদায় উন্নীত করাই ছিল প্রভুর উদ্দেশ্য। তাঁর শ্রীচরণকমলে আমাদের শতকোট প্রণাম রইল। আমরা চেষ্টা করলাম আজ প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের ১৫০তম আবির্ভাবতিথি উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত তথ্য তুলে ধরতে। আপনাদের কাছেও যদি প্রভুর আরও কিছু তথ্য থাকে আমাদের জানান, আমরা বিস্তারিত ভাবে প্রকাশ করবো সেই তথ্য।

 কৃতজ্ঞতাস্বীকারঃ 'পর্যটনে মুর্শিদাবাদ', দীননাথ মণ্ডল, অণিমা প্রকাশনী।
 তথ্যসূত্র লিপিবদ্ধেঃ শুভদীপ রায় চৌধুরী
#প্রভুজগদ্বন্ধুসুন্দর  #১০৫তমআবির্ভাবতিথি
#মুর্শিদাবাদডাহাপাড়া
#বনেদীয়ানা
#MurshidabadDahapara
#Jagatbondhusundar
#Bonediyana

Friday, May 1, 2020

সর্বকালের সেরা পরিচালক সত্যজিৎ রায়- শুভ জন্মদিন

কিংবদন্তী চলচিত্র পরিচালকঃশুভ জন্মদিন
 গতকাল আমরা শ্রদ্ধা জানিয়েছি কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী শ্রী মান্না দে'র জন্মদিনে। আজ আবারও এক উজ্জ্বল ব্যক্তিতের শুভ জন্মদিন, তিনি শ্রী সত্যজিৎ রায়। ভারতীয় চলচিত্র জগতের শ্রেষ্ঠ নক্ষত্রসম, বলাবাহুল্য সত্যজিৎ রায় ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। আজ ২মে,২০২০ ভারতীয় চলচিত্র জগতের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ পরিচালক সত্যজিৎ রায়'র ১০০তম জন্মদিন। বনেদীয়ানা পরিবারের পক্ষথেকে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা, প্রণাম রইল।
  বনেদীয়ানা এখন থেকে সমস্ত ধারার প্রাচীনত্ব, ঐতিহ্য তুলে ধরবে তাদের প্রকাশনায়। আজ কিংবদন্তী চিত্রপরিচালকের জন্মদিনে কিছু স্মৃতিকথা প্রকাশ করল, লিখলেন শুভদীপ। চলুন দেখা যাক সেই মহান পরিচালকের কিছু স্মৃতিকাহিনী।

সর্বকালের সেরা চিত্রপরিচালক সত্যজিৎঃ শুভ জন্মদিন

 ২মে,১৯২১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। তিনি শুধুমাত্র ছবিরই পরিচালক ছিলেন তা নয়, তিনি বাংলা ভাষায় কিছু ছোটোগল্প, উপন্যাসও রচনা করেছিলেন। একই সঙ্গে ছিলেন প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার, সাহিত্যিক, সঙ্গীত পরিচালক এবং গীতিকার,অর্থাৎ সত্যজিৎ রায় বহুল প্রতিভার অধিকারী। বস্তুতপক্ষে সত্যজিৎ রায়, নামটি শোনার পরই বাঙালির মনে তথাপি বিশ্ববাসীর মনে এক অদ্ভুত আবেগ কাজ করে কারণ বিশ্বের নামকরা পরিচালকদের মধ্যে আমাদের সত্যজিৎ রায়'র নাম আগেই থাকে। তিনি যে ধরনের বই লিখেছেন, তা নতুন করে বলে দিতে হয় না যে সত্যজিৎ রায়'র সাহিত্যিক মান কতটা। তাই সেই স্বনামখ্যাত চিত্রপরিচালকের জন্মদিনে বনেদীয়ানা'র শ্রদ্ধার্ঘ্য।
 সত্যজিৎ রায় পড়াশুনা করেছেন কলকাতার বিদ্যালয়ের মধ্যে অন্যতম বালিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং পরবর্তীকালে ইকোনমিক্স নিয়ে পড়াশুনা করেন প্রেসিডেন্সি কলেজে। ১৯৪০সালে সত্যজিৎ রায়'র মা শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করান। সেখানে গিয়ে সত্যজিৎ রায় চিত্রশিল্পী নন্দলাল বসু, বিনোদ বিহারী মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছিলেন, একথা অকপটে স্বীকার করেছেন।
   আমরা আজ তাঁর জন্মদিনে কিছু টুকরো কথাই প্রকাশ করছি, প্রকাশ করছি তাঁর জনপ্রিয় কিছু কাজের বিস্তারিত বর্ণনা। পরবর্তীপর্বে নিশ্চয়ই এই মহান পরিচালককে নিয়ে বিস্তারিত প্রবন্ধ প্রকাশিত হবে। প্রসঙ্গত ১৯৪৭ সালে সত্যজিৎ চিদানন্দ দাসগুপ্ত ও অন্যান্যদের সাথে মিলিত হয়ে তৈরি করলেন 'কলকাতা ফিল্ম সোসাইটি'। তাঁর কর্মজীবনে বহু জনপ্রিয় ছায়াছবি এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর দক্ষতা প্রমানিত হয়েছে। আমরা আজ তাঁর জন্মদিনে সেই সমস্ত বিষয়ের কিছু তথ্য তুলে ধরবার চেষ্টা করলাম। আপনারাও আসুন আমাদের পাশে, তুলে ধরুন তাঁর আরও কিছু রচনা আমাদের কমেন্টে আমরা পরবর্তীপর্বে তা বিস্তারিত আলোচনা করবো।
সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ছায়াছবিঃ
১. ছবির নামঃ পথের পাঁচালী
   ছবির প্রকাশিত সালঃ ২৬ আগস্ট১৯৫৫
   চিত্রনাট্যকারঃ সত্যজিৎ রায়
   উৎসঃ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় কর্তৃক পথের পাঁচালী
   সুরকারঃ রবিশঙ্কর
   ভাষাঃ বাংলা
২. ছবির নামঃ অপরাজিত
    ছবির প্রকাশিত সালঃ ১৯৫৬
    প্রযোজকঃ পশ্চিমবঙ্গ সরকার
    উৎসঃ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে
    শিল্প নির্দশেকঃ বংশী চন্দ্রগুপ্ত
    সংগীতঃ রবিশঙ্কর
    ভাষাঃ বাংলা
৩. ছবির নামঃ পরশপাথর
    ছবির প্রকাশিত সালঃ ১৭জানুয়ারি,১৯৫৮
    প্রযোজকঃ প্রমোদ লাহিড়ি
    সংগীতঃ রবিশঙ্কর
    ভাষাঃ বাংলা
৪. ছবির নামঃ অপুর সংসার
    ছবির প্রকাশিত সালঃ ১৯৫৯
    উৎসঃ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে
    সহপ্রযোজকঃ অমীয়নাথ মুখোপাধ্যায়
    সংগীতঃ রবিশঙ্কর
    চিত্রনাট্য ও পরিচালনাঃ সত্যজিৎ রায়
    ভাষাঃ বাংলা
৫. ছবির নামঃ অভিযান
    ছবির প্রকাশিত সালঃ ২৮সেপ্টেম্বর,১৯৬২
   উৎসঃ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযান উপন্যাস অবলম্বনে
  প্রযোজকঃ ভোলানাথ রায়
  সংগীতঃ সত্যজিৎ রায়
  ভাষাঃ বাংলা

৬. ছবির নামঃ চিড়িয়াখানা
    ছবির প্রকাশিত সালঃ ১৯৬৭
    সংগীতঃ সত্যজিৎ রায়
    সম্পাদনায়ঃ সমরেশ বোস
    শিল্প নির্দশেকঃ সুরথ দাশ
    প্রযোজনাঃ স্টার প্রোডাকসনস্
    ভাষাঃ বাংলা
৭. ছবির নামঃ গুপী গাইন বাঘা বাইন
    ছবির প্রকাশিত সালঃ ১৯৬৮
    চিত্রগ্রাহকঃ সুমেন্দু রায়
    উৎসঃ উপেন্দ্রকিশোর রায়ের 'গুপী গাইন বাঘা বাইন' অবলম্বনে
    গুপীর ভুমিকায়ঃ শ্রী তপেন চট্টোপাধ্যায়
    বাঘার ভুমিকায়ঃ শ্রী রবি ঘোষ
    শিল্প নির্দশেকঃ বংশী চন্দ্রগুপ্ত
    সম্পাদনাঃ দুলাল দত্ত
    ভাষাঃ বাংলা
৮. ছবির নামঃ দেবী
    ছবির প্রকাশিত সালঃ ১৯ফেব্রুয়ারি,১৯৬০
    উৎসঃ প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় রচিত কাহিনী অবলম্বনে
   আলোকচিত্রগ্রহণঃ সুব্রত মিত্র
   শিল্পনির্দেশকঃ বংশী চন্দ্রগুপ্ত
   শব্দগ্রহণঃ দুর্গাদাস মিত্র
   সম্পাদনাঃ দুলাল দত্ত
   সহপ্রযোজকঃ অমীয়নাথ মুখোপাধ্যায়
   সংগীতঃ ওস্তাদ আলি আকবর খাঁ
   ভাষাঃ বাংলা
৯. ছবির নামঃ  চারুলতা
    ছবির প্রকাশিত সালঃ ১৯৬৪
    উৎসঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত 'নষ্টনীড়' কাহিনীর চিত্ররূপ
    আলোকচিত্রগ্রহণঃ সুব্রত মিত্র
    শিল্পনির্দেশনাঃ বংশী চন্দ্রগুপ্ত
    সম্পাদনাঃ দুলাল দত্ত
    শব্দগ্রহণঃ নৃপেন পাল
    প্রযোজনাঃ আর. ডি. বনশল
    ভাষাঃ বাংলা
১০. ছবির নামঃ জয় বাবা ফেলুনাথ
     ছবির প্রকাশিত সালঃ ৫জানুয়ারি ১৯৭৯
     ফেলুদার ভূমিকায়ঃ শ্রী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
     ক্যামেরাঃ সৌমেন্দু রায়
     সম্পাদনায়ঃ দুলাল দত্ত
     শিল্প নির্দশেনাঃ অশোক বোস
     তত্ত্বাবধানঃ যতীশ চন্দ্র রায়
     প্রযোজনাঃ আর. ডি. বনশাল

আমরা উল্লেখ করলাম সত্যজিৎ রায় পরিচালিত অসংখ্য ছায়াছবির মধ্যে ১০টি ছায়াছবির কিছু বিস্তারিত বর্ণনা। এরপর উল্লেখ করছি তিনি কি কি পুরস্কার পেয়েছিলেন তার একটি ছোট্টো তালিকা। কেমন লাগছে আমাদের উপস্থাপনা? জানাতে ভুলবেন না কিন্তু। নীচে তালিকাটি দেওয়া হল-
দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার- ১৯৮৪
ন্যাশনাল অর্ডার অব দ্য লেজিওঁ অব অনার(ফ্রান্সের সর্বোচ্চ সম্মান)- ১৯৮৭
৩য় জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার- ১৯৫৫
বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচিত্র পুরস্কার- ১৯৫৭
১ম সান ফ্রান্সসকো আন্তর্জাতিক চলচিত্র পুরস্কার- ১৯৫৭
পথের পাঁচালী, অপুর সংসার, চারুলতা, সীমাবদ্ধ, আগন্তুক(১৯৯১)- শ্রেষ্ঠ ফিচার চলচিত্র পুরস্কার
মহানগর চলচিত্রের জন্য- তৃতীয় শ্রেষ্ঠ ফিচার পুরস্কার
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়- ডি লিট(১৯৭৩)
রয়েল কলেজ অফ আর্ট(লন্ডন)- ডি লিট(১৯৭৪)
ভারত সরকার- পদ্মভূষণ(১৯৭৬)
বার্লিন চলচিত্র উৎসব- বিশেষ পুরস্কার(১৯৭৮)
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়- ডি লিট(১৯৭৮)
মস্কো চলচিত্র উৎসব- বিশেষ পুরস্কার(১৯৭৯)
ভেনিস চলচিত্র উৎসব- সেন্ট মার্কের বিশেষ গোল্ডেন লায়ন(১৯৮২)
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়- ডি লিট (১৯৮০)
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়- ডি লিট(১৯৮৫)
ভারত সরকার- ভারতরত্ন(১৯৯২) ইত্যাদি
 এছাড়াও আরও অনেক অনেক সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন আমাদের চলচিত্র জগতের সর্বকালের সেরা পরিচালক শ্রী সত্যজিৎ রায়
  এবার আমরা উল্লেখ করছি সত্যজিৎ রায় যে সমস্ত ছায়াছবিতে অবদান রয়েছে তার মধ্যে কিছু ছায়াছবির নাম ও সংক্ষিপ্ত বিবরণ, ইংরাজি ছায়াছবিগুলি ইংরাজিতেই প্রকাশ করা হল

1. Name- THE RIVER
    Year- 1951
    Production- JEAN RENOIR'S PRODUCTION
   Camera Operator- Ramananda Sen Gupta
   Flim Editor- George Gale
   Music and Technical Advisor- M.A.Partha Sarathy
   Screenplay- Rumer Godden and Jean Renoir
  Associate Director- Sri Satyajit Ray
2. ছায়াছবির নামঃ বাক্সবদল
    ছায়াছবির প্রকাশিত সালঃ ১৯৭০
    উৎসঃ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাহিনী অবলম্বনে
    শিল্প নির্দশেনাঃ বংশী চন্দ্রগুপ্ত
    সম্পাদনাঃ রমেশ যোশী
    ব্যবস্থাপনাঃ নিতাই জানা
    পরিচালকঃ নিত্যানন্দ দত্ত
    সংগীত পরিচালক ও চিত্রনাট্যঃ সত্যজিৎ রায়
3. ছবির নামঃ গুপী বাঘা ফিরে এলো
   ছবির প্রকাশিত সালঃ ১৯৯১
   গুপীর ভুমিকায়ঃ শ্রী তপেন চট্টোপাধ্যায়
   বাঘার ভুমিকায়ঃ শ্রী রবি ঘোষ
   পরিচালকঃ শ্রী সন্দীপ রায়
   ক্যামেরাঃ বরুণ রাহা
   শিল্প নির্দশেকঃ অশোক বোস
   সংগীত পরিচালক, লেখক ও গীতিকারঃ সত্যজিৎ রায়
  এছাড়া আরও অনেক ছায়াছবির সাথে যুক্ত ছিলেন সত্যজিৎ রায়, পরে বিস্তারিত আলোচনা হবে। আজ খুবই সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরলাম তাঁর জীবনের কিছু অংশ। কেমন লাগল আমাদের জানান, আমরা চেষ্টা করবো আগামী পর্বে তাঁর আরও কিছু তথ্য তুলে ধরতে। বনেদীয়ানা পরিবারের পক্ষথেকে তাঁর জন্মদিনে শ্রদ্ধা ও প্রণাম রইল।
তথ্য সংগ্রহেঃ শুভদীপ রায় চৌধুরী
#সত্যজিৎরায়   #শুভজন্মদিন
#বনেদীয়ানা  #সত্যজিৎরায়েরছায়াছবি
#SatyajitRay  #HappyBirthdaySatyajit
#SatyajitRayFlimDetails
#Bonediyana