বনেদীয়ানা'র শ্রদ্ধার্ঘ্য
আজ বনেদীয়ানা'য় আরও এক শ্রদ্ধাঞ্জলিপর্ব প্রকাশিত হল, সকালে প্রকাশিত হয়েছে সর্বকালের সেরা চিত্রপরিচালক শ্রী সত্যজিৎ রায়'র প্রতি এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন। এখন প্রকাশিত হল শ্রী শ্রী প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের ১৫০তম আবির্ভাবতিথি সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিবেদন, লিখলেন শুভদীপ। বনেদীয়ানা পরিবারের পক্ষথেকে প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের শ্রীচরণে প্রণাম ও শ্রদ্ধা জানাই।
প্রভু শ্রীশ্রী জগদ্বন্ধু সুন্দরের ১৫০তম আবির্ভাবতিথিঃ বনেদীয়ানা
আজ বনেদীয়ানা পরিবার প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের আবির্ভাব উপলক্ষে মুর্শিদাবাদ জেলার ডাহাপাড়া ধামের কিছু স্মৃতিকথা প্রকাশিত হল। মুর্শিদাবাদ জেলার সর্বোচ্চ মন্দির এই জগদ্বন্ধু আশ্রম, বহুল পরিচিত হাজারদুয়ারি থেকে প্রায় সাত কিমি উত্তর-পঞ্চিমদিকে ভাগীরথীর অপরপ্রান্তেই অবস্থিত এই আশ্রম। ২০০০-০৩ সালে নির্মাণ করা হয় এই ১১৮ফুট উঁচু মন্দিরটি।
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দর ছিলেন বৈষ্ণব ধর্মগুরু এবং একই সঙ্গে সমাজসংস্কারক ও লেখক। তাঁর জন্ম মুর্শিদাবাদ জেলার ডাহাপাড়ায় পিতা শ্রী দীননাথ ন্যায়রত্ন ও মাতা বামাসুন্দরী দেবীর ঘরে। তাঁদের পৈতৃক নিবাস ছিল বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে। প্রচলিত লোককথায়, নদীয়া থেকে শ্রীচৈতন্যদেব শ্রীহট্ট যাত্রা করার সময় প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের পূর্বপুরুষ বাসুদেব চক্রবর্তীর গৃহে তিনি অবস্থান করেছিলেন। বাসুদেব চক্রবর্তীর উত্তরপুরুষ রামনারায়ণ চক্রবর্তী, রামনারায়ণের দুই পুত্র, যথাক্রমে কৃষ্ণমঙ্গল ও কৃষ্ণকমল। কৃষ্ণমঙ্গলের পুত্রের নাম শম্ভুনাথ। এই শম্ভুনাথের চারপুত্র ও দুই কন্যা। পুত্ররা হলেন হবানন্দ, বাণীকণ্ঠ, ভৈরব এবং দীননাথ এবং কন্যাদ্বয় হলেন হরসুন্দরী ও কাশীশ্বরী। আর কৃষ্ণকমলের একমাত্র পুত্র ছিল, আরাধন।
আরাধন বিবাহিত হলেও সংসারের প্রতি উদাসীন ছিলেন। তাঁর ভক্তিভাবে সন্তুষ্ট হয়ে মুর্শিদাবাদের বড়নগরের রানী ভবানীর দত্তকপুত্র সাধক রামকৃষ্ণ আরাধনকে তাঁর সভাপণ্ডিত করেন। এদিকে আরাধনকে সংসারে ফেরার জন্য শম্ভুনাথ তাঁর পুত্র দীননাথকে দেন আরাধনের হাতে। এর কিছুকাল পরেই আরাধন তাঁর ভ্রাতৃপুত্র দীননাথ ও কুলদেবতা শ্রীশ্রীরাধাগোবিন্দকে নিয়ে মুর্শিদাবাদে গঙ্গারতীরে(ডাহাপাড়ায়) আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।
উল্লেখ্য আরাধন পণ্ডিতের মৃত্যুর পর দীননাথ পৈতৃক নিবাস গোবিন্দপুরে ফিরে যান ও বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়েছিলেন। সেখানে ১২৬৯সালে(বাংলা) গুরুচরণ নামে এক পুত্র ও ১২৭২সালে(বাংলা) কৈলাসকামিনী নামে এক কন্যালাভ করেন। কিন্তু মাত্র আটবছর বয়েসে গুরুচরণ মারা গেলে তিনি কন্যা ও স্ত্রীকে নিয়ে মুর্শিদাবাদের ডাহাপাড়ায় ফিরে আসেন দীননাথ। সেখানে পূর্বপ্রতিষ্ঠিত রাধাগোবিন্দ কুঞ্জ সংস্কার করে পূজা ও অধ্যাপনার কাজে মনোনিবেশ করেন।
প্রসঙ্গত তিনি ডাহাপাড়ার বঙ্গাধিকারী ব্রজেন্দ্র নারায়ণ রায়ের সভাপতি হন। প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের মহাপ্রয়াণের পর থেকে তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ও লীলাসঙ্গী আচার্য শ্রীপাদ মহেন্দ্রজী শ্রীঅঙ্গনে মহানাম সম্প্রদায় গঠন করেন। প্রভুর কৃপা নির্দেশে গঠিত এ মহানাম সম্প্রদায় বিশ্বকল্যাণার্থে বাংলা ১৩২৮সালে অখণ্ড মহানাম কীর্তন শুরু করেছেন, যা আজও অব্যহত। আজ গোটা বিশ্ব শ্রীশ্রী জগদ্বন্ধু সুন্দরের মহানাম কীর্তনে মতে উঠেছে। মহেন্দ্রজী কিছু সময়ের জন্য শ্রীমৎ কুঞ্জদাসকে স্বতন্ত্র প্রচারের দায়িত্ব দেন।
পরবর্তীকালে কুঞ্জদাস আরও কয়েকজন বান্ধব নিয়ে মুর্শিদাবাদের ডাহাপাড়ায় প্রভু সুন্দরের জন্মভিটায় ন্যায়রত্নের শ্রীশ্রীরাধাগোবিন্দের কুঞ্জ সংস্কার করেন এবং নিয়মিত মহানাম ও প্রভু সুন্দরের জন্মোৎসব পালন করেন মহাসমারহে। তিনি ছিলেন মানবতার মূর্তপ্রতীক, জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে অধিকারবঞ্চিতদের মর্যদায় উন্নীত করাই ছিল প্রভুর উদ্দেশ্য। তাঁর শ্রীচরণকমলে আমাদের শতকোট প্রণাম রইল। আমরা চেষ্টা করলাম আজ প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের ১৫০তম আবির্ভাবতিথি উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত তথ্য তুলে ধরতে। আপনাদের কাছেও যদি প্রভুর আরও কিছু তথ্য থাকে আমাদের জানান, আমরা বিস্তারিত ভাবে প্রকাশ করবো সেই তথ্য।
কৃতজ্ঞতাস্বীকারঃ 'পর্যটনে মুর্শিদাবাদ', দীননাথ মণ্ডল, অণিমা প্রকাশনী।
তথ্যসূত্র লিপিবদ্ধেঃ শুভদীপ রায় চৌধুরী
#প্রভুজগদ্বন্ধুসুন্দর #১০৫তমআবির্ভাবতিথি
#মুর্শিদাবাদডাহাপাড়া
#বনেদীয়ানা
#MurshidabadDahapara
#Jagatbondhusundar
#Bonediyana
আজ বনেদীয়ানা'য় আরও এক শ্রদ্ধাঞ্জলিপর্ব প্রকাশিত হল, সকালে প্রকাশিত হয়েছে সর্বকালের সেরা চিত্রপরিচালক শ্রী সত্যজিৎ রায়'র প্রতি এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন। এখন প্রকাশিত হল শ্রী শ্রী প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের ১৫০তম আবির্ভাবতিথি সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিবেদন, লিখলেন শুভদীপ। বনেদীয়ানা পরিবারের পক্ষথেকে প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের শ্রীচরণে প্রণাম ও শ্রদ্ধা জানাই।
প্রভু শ্রীশ্রী জগদ্বন্ধু সুন্দরের ১৫০তম আবির্ভাবতিথিঃ বনেদীয়ানা
আজ বনেদীয়ানা পরিবার প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের আবির্ভাব উপলক্ষে মুর্শিদাবাদ জেলার ডাহাপাড়া ধামের কিছু স্মৃতিকথা প্রকাশিত হল। মুর্শিদাবাদ জেলার সর্বোচ্চ মন্দির এই জগদ্বন্ধু আশ্রম, বহুল পরিচিত হাজারদুয়ারি থেকে প্রায় সাত কিমি উত্তর-পঞ্চিমদিকে ভাগীরথীর অপরপ্রান্তেই অবস্থিত এই আশ্রম। ২০০০-০৩ সালে নির্মাণ করা হয় এই ১১৮ফুট উঁচু মন্দিরটি।
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দর ছিলেন বৈষ্ণব ধর্মগুরু এবং একই সঙ্গে সমাজসংস্কারক ও লেখক। তাঁর জন্ম মুর্শিদাবাদ জেলার ডাহাপাড়ায় পিতা শ্রী দীননাথ ন্যায়রত্ন ও মাতা বামাসুন্দরী দেবীর ঘরে। তাঁদের পৈতৃক নিবাস ছিল বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে। প্রচলিত লোককথায়, নদীয়া থেকে শ্রীচৈতন্যদেব শ্রীহট্ট যাত্রা করার সময় প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের পূর্বপুরুষ বাসুদেব চক্রবর্তীর গৃহে তিনি অবস্থান করেছিলেন। বাসুদেব চক্রবর্তীর উত্তরপুরুষ রামনারায়ণ চক্রবর্তী, রামনারায়ণের দুই পুত্র, যথাক্রমে কৃষ্ণমঙ্গল ও কৃষ্ণকমল। কৃষ্ণমঙ্গলের পুত্রের নাম শম্ভুনাথ। এই শম্ভুনাথের চারপুত্র ও দুই কন্যা। পুত্ররা হলেন হবানন্দ, বাণীকণ্ঠ, ভৈরব এবং দীননাথ এবং কন্যাদ্বয় হলেন হরসুন্দরী ও কাশীশ্বরী। আর কৃষ্ণকমলের একমাত্র পুত্র ছিল, আরাধন।
আরাধন বিবাহিত হলেও সংসারের প্রতি উদাসীন ছিলেন। তাঁর ভক্তিভাবে সন্তুষ্ট হয়ে মুর্শিদাবাদের বড়নগরের রানী ভবানীর দত্তকপুত্র সাধক রামকৃষ্ণ আরাধনকে তাঁর সভাপণ্ডিত করেন। এদিকে আরাধনকে সংসারে ফেরার জন্য শম্ভুনাথ তাঁর পুত্র দীননাথকে দেন আরাধনের হাতে। এর কিছুকাল পরেই আরাধন তাঁর ভ্রাতৃপুত্র দীননাথ ও কুলদেবতা শ্রীশ্রীরাধাগোবিন্দকে নিয়ে মুর্শিদাবাদে গঙ্গারতীরে(ডাহাপাড়ায়) আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।
উল্লেখ্য আরাধন পণ্ডিতের মৃত্যুর পর দীননাথ পৈতৃক নিবাস গোবিন্দপুরে ফিরে যান ও বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়েছিলেন। সেখানে ১২৬৯সালে(বাংলা) গুরুচরণ নামে এক পুত্র ও ১২৭২সালে(বাংলা) কৈলাসকামিনী নামে এক কন্যালাভ করেন। কিন্তু মাত্র আটবছর বয়েসে গুরুচরণ মারা গেলে তিনি কন্যা ও স্ত্রীকে নিয়ে মুর্শিদাবাদের ডাহাপাড়ায় ফিরে আসেন দীননাথ। সেখানে পূর্বপ্রতিষ্ঠিত রাধাগোবিন্দ কুঞ্জ সংস্কার করে পূজা ও অধ্যাপনার কাজে মনোনিবেশ করেন।
প্রসঙ্গত তিনি ডাহাপাড়ার বঙ্গাধিকারী ব্রজেন্দ্র নারায়ণ রায়ের সভাপতি হন। প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের মহাপ্রয়াণের পর থেকে তাঁর একনিষ্ঠ ভক্ত ও লীলাসঙ্গী আচার্য শ্রীপাদ মহেন্দ্রজী শ্রীঅঙ্গনে মহানাম সম্প্রদায় গঠন করেন। প্রভুর কৃপা নির্দেশে গঠিত এ মহানাম সম্প্রদায় বিশ্বকল্যাণার্থে বাংলা ১৩২৮সালে অখণ্ড মহানাম কীর্তন শুরু করেছেন, যা আজও অব্যহত। আজ গোটা বিশ্ব শ্রীশ্রী জগদ্বন্ধু সুন্দরের মহানাম কীর্তনে মতে উঠেছে। মহেন্দ্রজী কিছু সময়ের জন্য শ্রীমৎ কুঞ্জদাসকে স্বতন্ত্র প্রচারের দায়িত্ব দেন।
পরবর্তীকালে কুঞ্জদাস আরও কয়েকজন বান্ধব নিয়ে মুর্শিদাবাদের ডাহাপাড়ায় প্রভু সুন্দরের জন্মভিটায় ন্যায়রত্নের শ্রীশ্রীরাধাগোবিন্দের কুঞ্জ সংস্কার করেন এবং নিয়মিত মহানাম ও প্রভু সুন্দরের জন্মোৎসব পালন করেন মহাসমারহে। তিনি ছিলেন মানবতার মূর্তপ্রতীক, জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে অধিকারবঞ্চিতদের মর্যদায় উন্নীত করাই ছিল প্রভুর উদ্দেশ্য। তাঁর শ্রীচরণকমলে আমাদের শতকোট প্রণাম রইল। আমরা চেষ্টা করলাম আজ প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের ১৫০তম আবির্ভাবতিথি উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত তথ্য তুলে ধরতে। আপনাদের কাছেও যদি প্রভুর আরও কিছু তথ্য থাকে আমাদের জানান, আমরা বিস্তারিত ভাবে প্রকাশ করবো সেই তথ্য।
কৃতজ্ঞতাস্বীকারঃ 'পর্যটনে মুর্শিদাবাদ', দীননাথ মণ্ডল, অণিমা প্রকাশনী।
তথ্যসূত্র লিপিবদ্ধেঃ শুভদীপ রায় চৌধুরী
#প্রভুজগদ্বন্ধুসুন্দর #১০৫তমআবির্ভাবতিথি
#মুর্শিদাবাদডাহাপাড়া
#বনেদীয়ানা
#MurshidabadDahapara
#Jagatbondhusundar
#Bonediyana
No comments:
Post a Comment