ঐতিহ্যপূর্ণ রথযাত্রাঃ
বঙ্গদেশে বহু প্রাচীন প্রথানুযায়ী আজও বেশকিছু উৎসব পালিত হয়। বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্থাপত্য এবং ঐতিহ্য সত্যই অনন্য। বহু প্রাচীন স্থাপত্য রয়েছে বঙ্গে যা আজ প্রায় ধ্বংসের মুখে, আমরা বনেদীয়ানা পরিবারের পক্ষথেকে লকডাউন মিটলে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চেষ্টা করবো সেই সমস্ত স্থানে গিয়ে সংরক্ষণের জন্য আবেদন করার। বনেদীয়ানা ইতিহাস সচেতনতা গড়ে তুলতে উদ্যোগী, আপনারাও এগিয়ে আসুন বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে। আমাদের উচিত আগামী প্রজন্মের জন্য সেই সমস্ত ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখা।
সকলকে আবারও অনুরোধ আপনারা বাড়িতে থাকুন, প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। সকলে সুস্থ থাকুন আর ভালো থাকুন। প্রশাসনের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে সহযোগীতা করুন এই অনুরোধ রইল। আজ আমরা বাংলার প্রাচীন উৎসবগুলির মধ্যে রথযাত্রা উৎসব নিয়ে আলোচনা করবো।
বঙ্গে বহু প্রাচীনকাল থেকে রথযাত্রা উৎসব পালিত হয়ে আসছে, বিভিন্ন প্রাচীন মন্দিরে আজও নিষ্ঠার সাথে পালিত হয় শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের রথযাত্রা। আমরা আজ তিনটি প্রাচীন রথযাত্রা নিয়েই আলোচনা করবো, ভবিষ্যতে আরও অন্যান্য রথযাত্রা নিয়েও আলোচনা হবে।
রথযাত্রার এই পর্বটি লিখলেন শুভদীপ, ঐতিহ্যবাহী তিনটি রথযাত্রা নিয়ে লেখা প্রকাশিত হল আজ। চলুন দেখা যাক সেই ইতিহাস।
ঐতিহ্যের তিন রথযাত্রাঃ আভিজাত্য আজও অটুট
মাহেশের রথযাত্রাঃ- ভারতবর্ষের দ্বিতীয় প্রাচীন রথযাত্রা হল হুগলী জেলার শ্রীরামপুরের মাহেশের রথযাত্রা। বলাবাহুল্য এই রথযাত্রাই বাংলার প্রাচীনতম, ১৩৯৬ খ্রীঃ থেকে বঙ্গে এই মাহেশের রথযাত্রা উৎসব পালিত হয়ে আসছে। এই রথযাত্রার সূত্রপাতের এক প্রাচীন ইতিহাস রয়েছে। চতুর্দশ শতাব্দীতে ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী নামে এক সাধক পুরীধামে তীর্থ করতে গিয়েছিলেন। তাঁর ইচ্ছা ছিল যে তিনি জগন্নাথদেবকে নিজের হাতে ভোগ রেঁধে খাওয়াবেন। কিন্তু পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের পুরোহিতরা এই অনুমতি না দেওয়ায় তিনি এই ইচ্ছার প্রকাশ ঘটাতে পারলেন না। জগন্নাথের উদ্দেশ্যে ভোগ রাঁধতে না পেরে মনকষ্টে নাওয়া-খাওয়া ভুলেছিলেন। তখন স্বয়ং জগন্নাথ তাঁকে বলেন যে,বঙ্গের ভাগীরথী নদীর তীরে মাহেশ নামেতে এক গ্রাম রয়েছে। সেখানে যেতে,
স্বয়ং প্রভু এক বিরাট দারুব্রহ্ম(নিম গাছের কাণ্ড) পাঠিয়ে দেবেন। সেই কাঠেই বলরাম, সুভদ্রা এবং জগন্নাথদেবের মূর্তি গড়ে পুজো করতে বলেন। এই স্বপ্ন দেখে ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী মাহেশে এসে সাধনা শুরু করেন, একদিন মাহেশের ঘাটে একটি নিমকাঠ ভেসে এল। তিনি সেই নিমকাঠ তুলে দেবতার মূর্তি বানিয়ে মন্দির প্রতিষ্ঠা করলেন।
পরবর্তীকালে ১৭৫৫ সালে কলকাতার নয়নচাঁদ মল্লিক মাহেশের জগন্নাথ দেবের মন্দির তৈরি করেছিলেন, যা আজও বর্তমান। বর্তমান রথটি প্রায় ১২৯বছরের পুরানো, প্রায় ৫০ফুট উচ্চতা এবং ওজন প্রায় ১২৫টন। এই বিশাল সুউচ্চ রথে করে জগন্নাথ সুভদ্রা এবং বলভদ্রকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং উল্টোরথের দিন আবারও ফিরিয়ে আনা হয়। শ্রীশ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু মাহেশকে 'নব নীলাচল' বলেছেন। মাহেশের মেলার বর্ণনা আছে সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'রাধারাণী' উপন্যাসেও।
রথযাত্রার সময় জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রাদেবী হয়ে ওঠেন লৌকিক দেবতা। রথযাত্রার আগে স্নানযাত্রার পুণ্যতিথিতে ২৮ঘড়া জল আর দেড় মন দুধ দিয়ে তিনটি বিগ্রহকে স্নান করানো হয়। তারপরই দেবতারা জ্বরে পড়েন। আরামবাগ, গোঘাট, ঘাটাল থেকে কবিরাজ ডাকা হয়, তাঁদের তৈরি পাচন খেয়ে ভগবান সুস্থ হয়ে ওঠেন, এই সময় ভক্তদের দর্শন বন্ধ থাকে। রথযাত্রার একদিন আগে মন্দির খোলা হয়, ওই দিন রাজা হিসাবে অভিষেক হয় জগন্নাথের-একে বলা হয় 'নব-কলেবর'। সেই দিন প্রিয় ভোগও নিবেদন করা হয় দেবতাদের। এইভাবে প্রায় ৬২৪বছর ধরে আভিজাত্য ও ঐতিহ্যের সাথে পুজো হয়ে আসছে মাহেশে।
গুপ্তিপাড়ার রথযাত্রাঃ-
বাংলার প্রাচীন রথযাত্রা উৎসবের মধ্যে গুপ্তিপাড়ার রথ বিখ্যাত। আনুমানিক ১৭৪০ সালে এই রথযাত্রা উৎসব শুরু হয়, যা আজ প্রায় ২৮০বছর অতিক্রান্ত। স্বামী মধুসুদনানন্দ শুরু করেছিলেন এই রথযাত্রা উৎসব। এই রথের উচ্চতা প্রায় ৩৬ফুট, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে ৩৪ফুট করে। রথে থাকে চারটি দড়ি, প্রতিটি দড়িই ৩০০ফুট দীর্ঘ। প্রফুল্ল কুমার পান লিখেছেন,
'গুপ্তিপাড়া-রথ-কাছি ক্রমে ছোটো নয়।
রথের টান-কালে তা ছিঁড়ে ছিঁড়ে নেয়।।
ছেঁড়া-কাছি ঘরে রাখে শান্তির কারণে।
কত শত মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয় মনে।।'
অন্য স্থানের মতন এই দিন জগন্নাথদেব তার মাসির বাড়িতে সকল মানুষের অন্তরালে বন্ধ থাকেন। এই দিন হয় চিরায়ত প্রথা 'ভান্ডারা লুঠ', অর্থাৎ সেই প্রাচীন রীতি মেনে প্রতিবছর উল্টোরথের আগের দিন মাসির বাড়ির মন্দিরের তিনটি দরজা একসঙ্গে খোলা হয়। ঘরের ভিতরে থাকে রকমারি খাবারের পদ মালসায় করে। দরজা খোলার পর এই প্রসাদ নেওয়ার জন্য ভক্তের ভীড় দেখবার মতন হয়। কত দূরদূরান্ত থেকে ভক্তবৃন্দ আসেন এই দিন প্রসাদ পাওয়ার জন্য। ভান্ডারা লুঠের জন্য থাকে খিচুড়ি, বেগুন ভাজা সহ নানান রকমের ভাজা, ছানার তরকারি, পায়েস, ক্ষীর, ফ্রায়েড রাইস, মালপুয়া, সন্দেশ, রাবড়ি সহ মোট ৫২রকমের পদ প্রায় ৫৫০টির বেশি মালসা থাকে। এই সমস্ত প্রাচীন প্রথা মেনে নিষ্ঠার সাথে মহাসমারহে পালিত হয় গুপ্তিপাড়ার রথযাত্রা।
বড়িশার রথযাত্রাঃ- বাংলার প্রাচীন রথযাত্রা উৎসবের মধ্যে অন্যতম বড়িশার রথযাত্রা উৎসব। এই প্রাচীন বড়িশার রথযাত্রা শুরু করেন সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের সুসন্তান রায় কৃষ্ণদেব মজুমদার চৌধুরী, যা আজ ৩০০বছরের বেশি অতিক্রান্ত।
প্রসঙ্গত সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার সমগ্র বাংলার সামাজিক ইতিহাসে এক বিশেষ ও স্বতন্ত্র স্থান অধিকার করে আছে। এই পরিবারের ইতিহাসের সূচনা হয় খ্রিষ্টীয় দশম শতকে যখন বাংলার শাসনকর্তা মহারাজ আদিশূর কনৌজ হতে পাঁচজন বেদজ্ঞ শ্রোত্রিয় ব্রাহ্মণকে রাঢ় বঙ্গে নিয়ে আসেন সনাতন ধর্ম পুনরায় প্রবর্তন করার জন্য। সাবর্ণ পরিবারের আদি পুরুষ মহামতি বেদগর্ভ এই পঞ্চ ব্রাহ্মণের অন্যতম।
নন্দদুলালের বড় ছেলে রাঘবেন্দ্র পাকাপাকিভাবে বড়িশার বড় বাড়িতে বসবাস শুরু করলেন। এই রাঘবেন্দ্রই হলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি 'বড়িশাধিপতি'খেতাব ব্যবহার শুরু করেন। রাঘবেন্দ্রর একমাত্র সন্তান হ ললেন তারিণীচরণ। এই পিতা পুত্রের সময়ে বড়বাড়ির দুর্গোৎসব এবং রথযাত্রা বিশেষ খ্যাতি ও ব্যাপকতা অর্জন করে। তারিণীচরণ অষ্টাদশ শতকের শেষদিকে বড়বাড়ির উত্তর পশ্চিম প্রান্তে এক বাজার বসান। আগে বসত সাপ্তাহিক হাট, প্রজাদের প্রয়োজনে ও এলাকার ব্যবসাকে সমৃদ্ধশালী করার তাগিদে তা হল নিয়মিত বাজার। জমিদারের খেয়ালে বাজার তাই নাম হল সখের বাজার।সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার ১৭১৯ খ্রীষ্টাব্দে রথযাত্রা উৎসবের সূচনা করেছিলেন। এই রথযাত্রা উৎসবের সূচনা করেন শ্রী কৃষ্ণদেব রায় চৌধুরী। পরবর্তী কালে ১৯৭৫ সালে এই উৎসব এক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। সেই বছর ডায়মন্ড হারবার রোড সম্প্রসারণের সময়ে রথের ঘরটি ভাঙা পড়ে। ফলে শতাব্দী প্রাচীন কাঠের রথটি রোদ্দুরে ও জলে নষ্ট হয়ে যায়। গৃহহীন অবস্থায় অযত্নে ও অবহেলায় রাস্তার ধারে পড়ে থাকার সময়ে বহুমূল্য পিতলের কারুকার্য্যগুলি রথ থেকে চুরি হয়ে যায়। ফলে ১৯৭৮ সালের পর থেকে রথটিকে আর চালানো সম্ভব হয় না। এর কয়েক বছর বাদে বড় বাড়ির সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের সুযোগ্য উত্তরসূরী শ্রী গোরাচাঁদ রায় চৌধুরীর উদ্যোগে আবার উৎসবটিকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়। এলাকার বিশিষ্ট নাগরিক বৃন্দ ও সাবর্ণ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয় 'বড়িশা সার্বজনীন রথযাত্রা উৎসব কমিটি। জনসাধারণের কাছ হতে সংগৃহীত আর্থিক অনুদানে নির্মিত হয় নতুন রথযানখানি। শ্রী জগন্নাথদেবের অলৌকিক কৃপাবলে পুরী শ্রীজগন্নাথধামের কারূকৃতগণ মাত্র দু'সপ্তাহে প্রস্তুত করে তোলেন নতুন রথ -অবিকল পুরীর জগন্নাথদেবের ছোট সংস্করন যেন। এর প র পশ্চিম বঙ্গের তৎকালীন রাজ্যপাল শ্রী ভৈরবদত্ত পান্ডের কাছে আবেদন করা হয় নূতন রথগৃহ নির্মাণ করে দেবার জন্য। রাজ্যপালের সচিবাল য়ের আদেশক্রমে পশ্চিম বঙ্গ সরকারের পূর্তবিভাগ ১৯৮৫ সালে নূতন রথগৃহ নির্মাণ করে দেন বড়বাড়ির ভিতরে। বর্তমানে রথগহটিকে আংশিক ভাবে পুনর্গঠন করে একটি মন্দিরের আকার দেওয়া হয়েছে।
মহাপ্রভু জগন্নাথ দেবের মন্দির সখের বাজারে অবস্থিত। বর্তমান মন্দিরটি শ্রী তারাকুমারের জেষ্ঠ পুত্র শ্রী লাল কুমার রায় চৌধুরী ১৯১১ সালে নির্মাণ করেন। পরবর্তী কালে ভক্তবৃন্দ দ্বারা মন্দিরের সংস্কার সাধিত হয়। এই মন্দিরকে কেন্দ্র করেই রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। তবে বর্তমানে জনসংখ্যা ও যানবাহনের ক্রমবর্ধমান চাপে পূর্বতন মেলার জৌলুশ অনেকটাই কমে গেছে।প্রতিবছর রথযাত্রার দিন বিকেলবেলা মন্দির থেকে মহাপ্রভু জগন্নাথদেব, দেবী সুভদ্রা বলভদ্রদেবের দারুবিগ্রহ এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে বড় বাড়ীতে নিয়ে আসা হয় রথোপরি স্থাপনের উদ্দেশ্যে। তারপর প্রথা অনুযায়ী, যিনি উদ্বোধন করতে আসেন, তিনি প্রথমে নারিকেল ভেঙে রথের দড়িতে টান দেন। পরে ভক্তবৃন্দ ও জনসাধারণ রথরজ্জু আকর্ষণ করেন। বড়বাড়ী থেকে ডায়মন্ড হারবার রোডের পূর্ব সরণী দিয়ে উত্তরে বেহালা সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির ও দক্ষিণে শীলপাড়া ভজন আশ্রম পর্যন্ত (বর্তমানে এটাই যাত্রাপথ) প্রায় চার কিলোমিটার পথ এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহ বিগ্রহ - অধিষ্ঠিত রথের পরিক্রমা হয়।
পরে বোসপাড়ায় এসে রথযাত্রা সমাপ্ত হয়। প্রথা অনুযায়ী এরপর বিগ্রহগুলি স্বর্গীয় শ্রী হীরালাল বসুর বাড়ীতে অবস্থান করে। নয়দিনের মাথায় পুনর্যাত্রা বা উল্টোরথ অনুষ্টিত হয়। এদিন রথযাত্রা শুরু হয় বোসপাড়া থেকে। আর অনেকটা একইভাবে পরিক্রমা করে সখের বাজার স্থিত মন্দিরে এসে শেষ হয়।এক কালে যা ছিল পুরোমাত্রায় জমিদারী উৎসব তা আজ পরিণত হয়েছে এক সার্বজনীন ও সর্বসাধারণের উৎসবে। শান্তি, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধের বার্তা বহন করে চলেছে দ্বিশতাব্দী প্রাচীন এই উৎসব। 'বড়িশা রথযাত্রা উৎসব', কলকাতা শহরের প্রাচীনতম রথযাত্রা উৎসব, যদিও আজ তার পুরোনো জৌলুস অনেকটাই ম্রিয়মাণ। বর্তমানে বাৎসরিক উৎসব 'বড়িশা সার্বজনীন রথযাত্রা উৎসব কমিটি' দ্বারা আয়োজিত হয় ভক্তবৃন্দ ও জনসাধারণের অকৃপণ আর্থিক সাহায্যে ও সাবর্ন রায় চৌধুরী পরিবারের সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণে।
এইভাবে আমরা রথযাত্রার এই পর্বে তিনটি প্রাচীন রথযাত্রা উৎসব নিয়ে আলোচনা করলাম। আবারও অন্যান্য রথযাত্রা নিয়েও লেখা হবে, আপনারা সঙ্গে থাকুন আর অবশ্যই বাড়িতে থাকুন। বনেদীয়ানা পরিবারের পক্ষথেকে উল্লিখিত তিনটি রথযাত্রা উৎসবের সাথে যুক্ত সদস্যদের জানাই আগাম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
তথ্যসূত্র গবেষণায়ঃ- শুভদীপ রায় চৌধুরী
চিত্রঋণঃ- শ্রীমান্ বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সংগৃহীত