ঐতিহ্যের অন্নপূর্ণাপর্বঃ
বিগত বেশকিছু দিন ধরে বনেদীয়ানা পরিবার অন্নপূর্ণাপুজো নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে চলেছে। এবার এই পর্বালোচনার অষ্টমদিন, আজ প্রকাশিত হল হুগলী জেলার চন্দ্রবাড়ির অন্নপূর্ণা পুজোর ইতিহাস, লিখলেন শুভদীপ। চলুন দেখা যাক সেই বাড়ির পুজোর রীতিনীতি।
ঐতিহ্যের চন্দ্র বাটীর অন্নপূর্ণাপুজোঃ- হুগলী
হুগলির তারকেশ্বরের চন্দ্র বাড়ির অন্নপূর্ণা পুজো। এই পুজোর প্রথম প্রচলিত হয় ১৯৬৬ সালে,তারপর থেকেই এই পুজো সাড়ম্বরে পালিত হয়ে আসছে।এই পুজোর প্রতিষ্ঠাতা শঁরৎ চন্দ্র।চন্দ্রদের আদি বাড়ি উত্তর কলিকাতার আহিরিটোলায়।ওখানেও আনুমানিক ২০০ বছর ধরে অন্নপূর্ণা পুজো পালিত হয়ে আসছে।১৯৫০ সাল থেকে শরৎ চন্দ্রের পরিবার তারকেশ্বরে বসবাস শুরু করেন কিন্তু অন্নপূর্ণা পুজো কলিকাতার বাড়িতেই হতো।শঁরৎ চন্দ্রের স্ত্রী সঁখী সোনা চন্দ্র মাঝে মাঝে তারকেশ্বরের বাড়িতেই নূপুরের ধ্বনি শুনতে পেতেন তখন তিনিই তাঁর স্বামীকে কথাটি জানান আর সেই বছর থেকেই শরৎ চন্দ্র তাঁর বসতগৃহে অন্নপূর্ণা পুজোর প্রচলন করেন।অতীতে কলিকাতার কুমারটুলি থেকেই প্রতিমা আসতো একবার প্রতিমা আনতে গিয়ে দুর্যোগের মুখে পরলে প্রতিমা ভেঙে যায় তারপর থেকে স্থানীয় মৃৎশিল্পী কে.পি,কুন্ডুই এই প্রতিমার রূপদান করেন।আগে নিজ বসতগৃহেই প্রতিমা নির্মান করা হলেও এখন শিল্পীর নিজস্ব
মৃৎশিল্পকেন্দ্রতেই প্রতিমা নির্মান করা হয়।
শাক্ত মতেই এই পুজো হয়।অষ্টমী তিথিতেই মায়ের মূল পুজো হয়।অন্নপূর্ণার বিগ্রহের ডান পাশে বাড়ির কুলদেবতা লক্ষীকেও বসানো হয়।আগে বাড়ির উঠোনে পুজো হতো এখন মায়ের নিদিষ্ট মন্দিরেই পুজো হয়।এখানে দেবীকে অন্নভোগ দেওয়ার রীতি নেই তবে শুকনো মিষ্টি, দই,রাবড়ি প্রভৃতি মা'কে নিবেদন করা করা হয়।প্রাচীনে শঁরৎ চন্দ্রের আমলে বাড়িতেই হালুইকর এসে মিষ্টি বানাতো, কালের নিয়মে সেগুলি বন্ধ হয়ে গেছে।পুজোর আগের দিন বাড়ির মেয়েরা মাকে সোনা,রূপার অলঙ্কারে সুসজ্জিত করেন।১০৮টি দীপশিখা প্রজ্জ্বলন,বাড়ির এয়োস্ত্রীদের ধুনো পোড়ানোর রীতিও রয়েছে।রামনবমীর দিন কনকাঞ্জলি প্রথা আর বরণের মধ্য দিয়ে মা'কে বিদায় দেওয়ার রীতি রয়েছে।
কৃতজ্ঞতাস্বীকারঃ-শ্রীমতী সাবিত্রী দে এবং শ্যামল চন্দ্র ( শরৎ চন্দ্রের কনিষ্ঠা কন্যা এবং পঞ্চম পুত্র)
তথ্যসংগ্রহেঃ- দীপমাল্য চন্দ্র
তথ্যসূত্র লিপিবদ্ধেঃ- শুভদীপ রায় চৌধুরী