অন্নপূর্ণাপর্বঃ
কেমন লাগল আমাদের পাঁচটি পর্ব? ধারাবাহিকতার গন্ধ কতটা পেলেন আপনারা? নতুন কোন কোন বাড়ির অন্নপূর্ণা পুজোর কথা জানতে চাইছেন? জানান আমাদের ই-মেলের মাধ্যমে, আমরা চেষ্টা করবো সেই বাড়ির ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরতে। আজ আমরা হরিপাল অঞ্চলের ঘোষ বাড়ির অন্নপূর্ণা পুজোর কথাই আলোচনা করবো, সেই পরিবারের রীতিনীতি নিয়ে আলোচনা করবো। লিখলেন শুভদীপ।
ঘোষ পরিবারের অন্নপূর্ণাপুজোঃ- আটপুর, হুগলী
ঘোষ পরিবারের অন্নপূর্ণা পুজো আজও নিষ্ঠার সাথে আর সেই সঙ্গে ধুমধামের সাথে পালিত হয়ে আসছে। পরিবারের এক সদস্যা মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন, সেই থেকেই পুজোর শুরু। ঠাকুরদালান আলো করে এলেন মা অন্নপূর্ণা। পরিবারে অন্নপূর্ণা পূজা সকাল থেকেই শুরু হয়,সারাদিন ধরে নানান রীতিনীতি পালনের মাধ্যমে চলে দেবীর আরাধনা। দেবীর ভোগে থাকে পোলাও, খিচুড়ি, পাঁচ রকমের ভাজা, নানান রকমের তরকারি, চাটনি, পায়েস আর সঙ্গে থাকে প্রায় ১৬রকমের মিষ্টান্ন। পরিবারের গৃহদেবতা হলেন শ্রীশ্রীদামোদর জীউ, তাঁর জন্য থাকে মালপুয়া, রাবড়ি আর নানান ধরনের মিষ্টান্ন। ঘোষ বাড়ির পুজোয় কুমারিপুজোরও রীতি রয়েছে এছাড়া পুজোর শেষে পরিবারের সদস্যরা মহাদেবকে ভিক্ষাপ্রদান করেন।
পুজোর দিন সন্ধ্যায় হয় ন্যাড়া পোড়ানো বা যাকে চাঁচর পোড়ানো বলা হয়, সেই রীতিও পালন করা হয় পরিবারের গৃহদেবতার উদ্দেশ্যে। পুজোর দিন ১০৮টা প্রদীপ প্রজ্জ্বলন থেকে শুরু করে ১০৮টি পদ্মপ্রদান ইত্যাদি নানান উপাচারে দেবীকে পুজো করা হয় হরিপালের ঘোষ বাড়িতে।
পরের দিন ভোরবেলা ৪টের সময় হয় 'দেবদোল', আবিরখেলা। সেই দিন ঘোষ বাড়ির পক্ষথেকে নরনারায়ণ সেবার আয়োজন করা হয়, প্রায় ১০০০জন লোকের জন্য দেবীর প্রসাদের ব্যবস্থা করা হয়। নিষ্ঠার সাথে আজও পরিবারের বংশধরেরা পুজো করে আসছেন দেবী অন্নপূর্ণার। বনেদীয়ানা পরিবারের পক্ষথেকে ঘোষ বাড়ির সদস্যদের জন্য রইল অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
কিভাবে পৌঁছাবেনঃ- হাওড়া থেকে তারকেশ্বর লোকাল ধরে হরিপাল স্টেশনে নামতে হবে। সেই স্টেশনে নেমে ১০নং বা ৯নং বাসে উঠে নামতে হবে 'তোরামোড়' স্টপেজে। সেখানে নেমে টোটো করে ঘোষ বাড়ি বললেই পৌঁছে যাবেন ঘোষ বাড়ির ঠাকুরদালানে, আর দর্শন করে আসবেন মা অন্নপূর্ণাকে।
কৃতজ্ঞতাস্বীকারঃ- শ্রী অভিজিৎ ঘোষ মহাশয়
তথ্য লিপিবদ্ধেঃ- শুভদীপ রায় চৌধুরী
No comments:
Post a Comment