ঐতিহ্যের অন্নপূর্ণাঃ-
অন্নপূর্ণা পুজোর বেশকিছু দিন আগেই শুরু হয়ে গেল ট্রাডিশনাল হেরিটেজের পর্বালোচনা। বিগত ইন্টারনেশাল সেমিনারের পর আবার আলোচনা শুরু হল বনেদীয়ানায়। দেখতে থাকুন এই পর্ব সবকটি লেখা ও কেমন লাগল আমাদের ই-মেলের মাধ্যমে জানান। আজ আমরা উত্তর কলকাতার মানিকতলার সেন বাড়ির অন্নপূর্ণা পুজোর কথা আলোচনা করবো, চলুন দেখা যাক সেই প্রাচীন রীতিনীতি কথা।
ঐতিহ্যের সেন বাড়ির অন্নপূর্ণাপুজোঃ- উত্তর কলকাতা
এই সেন বাড়ির পুজো শুরু হয়েছিল আনুমানিক ১৯১০ সালে, শুরু করেছিলেন শ্রী নঁন্দলাল সেন মহাশয়। সেই সময় নন্দলাল মহাশয় কাশিমবাজারের মহারাজার থেকে উপহার স্বরূপ আর্থিক সাহায্য পাওয়ার পরেই তাঁর ঠাকুরদালানে শুরু করলেন শ্রীশ্রীঅন্নপূর্ণা মাতাঠাকুরাণীর পুজো, যা এবছর ১১০বছরে পদার্পণ করবে। বিগত পাঁচ বছর ধরে সেন বাড়ির পুজো হয়ে আসছে উত্তর কলকাতার মানিকতলার বাটীতে। অতীতে এই পুজো পরিবারের প্রতিটি বাড়িতেই পালা অনুযায়ী পালন হত।
এই বাড়িতে পুজোর দিন সকালে দেবীকে নানান রকমের ফল, মিষ্টান্ন আর ব্রহ্ম ভোগ নিবেদন করা হয়। দুপুরের ভোগে থাকে লুচি, সুজি, নানান রকমের ভাজা ইত্যাদি। বিকালবেলায় দেবীকে খিচুড়িভোগ নিবেদন করা হয় আর রাত্রে দুধ, খই, মিষ্টি ইত্যাদি। যেহেতু এই বাড়ির কুলদেবতা শ্রীশ্রী রাঁম শালগ্রামশিলা সেহেতু রামনবমীও পালন করা হয় সেন বাড়িতে। তাই সেই জন্য দেবীর বিসর্জন সেই দিন হয় না। পরের দিন দেবীকে পায়েস, ছানার জিলিপি আর দই চিঁড়ে ইত্যাদি ভোগ হিসাবে নিবেদন করা হয়।
সেন বাড়ির সকল সদস্যবৃন্দ অন্নপূর্ণা পুজোর দিন মহাদেবকে ভিক্ষাপ্রদান করেন। ১০৮প্রদীপ ও ১০৮পদ্মের সহযোগে দেবীর পুজো হয়ে থাকে সেন বাড়ির ঠাকুরদালানে। সেন বাড়িতে কুমারিপুজোও হয় এই দিনে। এছাড়াও অন্নপূর্ণা পুজোর দিন সেন বাটীতে লক্ষ্মীপূজা ও চঁণ্ডীপুজোও অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বহু বছর ধরেই সেন বাড়ির মৃন্ময়ীকে রূপ দিচ্ছেন শ্রী গৌর পাল মহাশয়। এই বাড়ির শ্রীশ্রী ঠাকুরানীকে নানান প্রাচীন গহনায় সজ্জিত করা হয়।
এইভাবে নানান উপাচারে ও রীতিতে আজও পুজো হয়ে আসছে উত্তর কলকাতার সেন বাটীতে। তাদের সকল সদস্যদের বনেদীয়ানা পরিবারের পক্ষথেকে জানাই আগাম পুজোর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
কৃতজ্ঞতাস্বীকারঃ- শ্রী সুমন সেন গুপ্ত মহাশয়
তথ্যসূত্র লিপিবদ্ধেঃ- শুভদীপ রায় চৌধুরী
No comments:
Post a Comment