Tuesday, June 25, 2019

সীতারামদাস ওঙ্কারনাথ দেব পর্ব-৩


রত্নগর্ভা ভারতভূমিপর্বঃ
আজ প্রকাশিত হল অনন্ত শ্রী ঠাকুর ওঙ্কারনাথ দেব-এর তৃতীয়পর্ব লিখলেন শ্রীমান্ কৃষ্ণেন্দু বিশ্বাস আলোচনায় আজ সীতারামদাস ওঙ্কারনাথ দেব পর্ব-

আগের পর্বের লিঙ্কঃ-
https://www.facebook.com/Heritagetraditional/posts/2381527052083942?__tn__=K-R
শ্রী সম্প্রদায়ের গোঁড়ামি বা কঠোরতা দেখে ঠাকুর সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি শ্রী সম্প্রদায়ের এই গোঁড়ামি পরিত্যাগ করবেন সেই ভাবনার কাজে চলে এলেন বঙ্গে নিলেন শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর ভাবধারা, জগতে নাম প্রচার করতে হবে, কিন্তু সেই নাম প্রচার করার পূর্বে নামির আদেশ প্রয়োজনীয়, তাই চলে গেলেন পুরীতে সমুদ্রের তীরবর্তী একটি কুটিরে ঠাকুর প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে বসলেন জপে যে যতদিন না শ্রীজগন্নাথের আদেশ পাবেন ততদিন পর্যন্ত প্রতিদিন একটি করে খাদ্যদ্রব্য পরিত্যাগ করবো এই ভাবে সপ্তম দিনে সম্পূর্ণ নির্জলা সাধনা করে তবুও যদি জগন্নাথের আদেশ না পান তবে তিনি মহাসমুদ্রে শরীর ত্যাগ করবেন দিন যায় রাত যায় তিনদিন পর শ্রীজগন্নাথ মহাপ্রভুর করুণা হল, গোপাল রূপে এসে সীতারামের চতুর্দিকে ঘুরতে লাগলেন আর বললেন,"যা যা নাম দিগে যা"
 ঠাকুর শ্রীজগন্নাথ মহাপ্রভুর আদেশ পেয়ে চলে এলেন বঙ্গে শুরু হল নাম প্রচার সীতারাম এমতাবস্থায় বৈষ্ণব বেশাশ্রিত হলেন অর্থাৎ হলেন বাবাজী শুরু হল কঠোর সাধনা নামপ্রচার ঠাকুর যখন সাধনার শেষ স্তরে পৌঁছালেন অর্থাৎ 'ওঁ'কারে লয় হলেন একদিন দৈববাণী হল যে তিনি 'ওঁ'কারে বিলীন হয়েছেন তবুও সে কথা সীতারাম মানতে চাইলেন না, মনে মনে ইচ্ছে রয়ে গেল যে যদি কোন মহাপুরুষ এসে সে কথা বলেন তবেই তিনি মানবেন
 কিছুদিন পর হঠাৎ একজন মহান সাধক এসে বললেন যে তিনি সত্যই 'ওঁ'কারে লয় হয়েছেন, তাই তাঁর নামকরণ করেন "ওঙ্কারনাথ" তাই এবার তাঁর পূর্ণ নাম হল শ্রী সীতারাম দাস ওঙ্কারনাথ দেব ঠাকুর শুরু করলেন নামপ্রচার দীক্ষাদান তবে তবে ঠাকুর বর্ণাশ্রম প্রথাকে খুব মান্যতা দিতেন এবং বর্ণাশ্রম প্রথাকে সর্বদা মেনে এসেছেন ঠাকুর বলতেন যে শাস্ত্র ভগবানের জয়গান করছেন, সেই শাস্ত্রই বর্ণাশ্রম ধর্মকে বিশেষভাবে মান্যতা দিয়েছেন, তাই যারা ভগবানকে মানে তাদের নিকট বর্ণাশ্রমকে পূর্ণরূপে মান্যতা দেওয়াই শ্রেয়
 ঠাকুর এমন আশ্চর্য বিষয় দেখিয়েছেন তাঁর শিষ্যদের বা বলতে গেলে তিনি তাঁর শিষ্যদের ইষ্টদর্শন করিয়েছেন স্বদেহে, শুধু তাই নয় সাধনার প্রথম জীবনে নিজের গুরুদেবকেও বিশ্বরূপ দর্শন করিয়েছেন স্বদেহে তাই ঠাকুরকে অনন্তশ্রী বলা হয়
পরবর্তী এক সময়ে ঠাকুর রয়েছেন পুরীতে, অনন্তশ্রী ঠাকুর অসীমের ধ্যানে মগ্ন, আচ্ছন্ন কিছু অন্তরঙ্গ ছাড়া সকলের প্রবেশ নিষেধ তারই ফাঁকে এক আগন্তুক ভক্ত আর্তভেদী ক্রন্দনে ঠাকুরের পায়ে আর্তি জানাতে লাগল "বাবা আমার কী হবে?" সেই ভক্তকে শান্ত করে তার সমস্যা ভূমানন্দদেব শ্রী শ্রী ঠাকুরের চরণে নিবেদন করলেন প্রকৃত ঘটনা ভক্তটি প্রতিমাসের এক বিশেষ তিথিতে চণ্ডীপাঠ করে পরমান্ন নিবেদন পূর্বক মায়ের পূজা করেন কিন্তু ভ্রমবশত তিনি খেয়াল করেন নি যে এই তিথি অম্বুবাচির মধ্যে পড়েছে পুজোর পর তার গ্রামের এক বৃদ্ধ বলেন,"তুই অম্বুবাচিতে মাকে গরম পায়েস নিবেদন করলি কি করে? জানিস না অম্বুবাচিতে ঠাকুরকে গরম জিনিস দিতে নেই?"
 যাই হোক এই কথা শুনে সে মনকষ্টে প্রতিবিধানের জন্য ছুটে চলেছেন নানান স্থানে, নানা পণ্ডিতের সমীপে যখন তাঁর মনকষ্ট কমলো না তখন এক গুরু ভ্রাতার পরামর্শে ঠাকুরের কাছে গিয়ে পড়েন প্রচণ্ড ক্রন্দন করতে থাকেন ঠাকুর বলেলেন সবটাই মন তোর কিন্তু মনকে কখনও কর্তা হতে দিস না নিজেকে কর্তা ভেবে মিছে মিছে ঘুরে মরছিস কেন? দে দে সবটা ফেলে তোর ওই চণ্ডী বুড়ির পায়ে, দেখবি ওই সব সমস্যার সমাধান করে দেবেন মুখ ঘুরিয়ে থাকতে পারবে না দেখ তিনি তো ইচ্ছাময়ী, তাঁর ইচ্ছা ছাড়া গাছের একটা পাতাও নড়ে না সূর্য্য চন্দ্র তাঁর কৃপা ভিন্ন কীরলন দিতেও পারে না যার জন্য তোর এত কান্না, এত চোখের জল, তাঁর যে তোর হাতে পায়েস খাওয়ার ইচ্ছা হয়েছে না হলে একাজ করার তুই বা কে বা পরমুহূর্তে এসে বলা ওই বুড়ি মা বা কে?
 সেই ভক্ত পরম সন্তোষে চলে যাওয়ার পর ভূমানন্দ দেব ঠাকুরকে বললেন,"বাবা ওনার হাতে পায়েস খেতে ইচ্ছা হয়েছিল মায়ের এটা বুঝলাম, কিন্তু ওনার কান্নাকাটি বা এই ছোটাছুটির কারণ কী?" ঠাকুর বললেন সব তাঁর ইচ্ছা, ওর আকুতি, ছোটাছুটি, মায়ের জন্য মায়ের কাছে প্রাণ আকুল করে কান্না যে মায়ের বড় প্রিয় তিনি সকল শাস্ত্রের পার মন্ত্র নয়, তন্ত্র নয়, তাঁর সবচেয়ে প্রিয় আকুলতা আর দুফোঁটা চোখের জল ক্রমশ....
তথ্যসূত্রঃ শ্রীমান্ কৃষ্ণেন্দু বিশ্বাস



Tuesday, June 18, 2019

বিশেষ সম্মান বনেদীয়ানা'র

১৬০৮ খ্রিঃ সম্রাট জাহাঙ্গীরের থেকে ৮টি পরগনার  জায়গীরদারি লাভ করেছিলেন লক্ষ্মীকান্ত. ১৬১০সালে লক্ষ্মীকান্ত শুরু করেন বাংলাদেশের প্রথম সপরিবার শ্রীদুর্গার পূজাকার্তিক,গনেশ এবং মহিষাসুরমর্দিনী-দুর্গাকে আনলেন একই কাঠামোর মধ্যে এককথায় তিনিই বাংলাদেশে আধুনিক দুর্গাপূজার জনক বড়িশা গ্রামে কাছারী বাড়ী সংলগ্ন জমিতে আটচালার চণ্ডীমণ্ডপ নির্মাণ করে মাতৃ-আরাধনার প্রবর্তন করেন ইচ্ছা করলেই তিনি বিশাল অট্টালিকা করে রাজকীয় আভিজাত্যের মাধ্যমে দেবীপূজা করতে পারতেন কিন্তু তিনি তা করলেন না, যাতে তাঁর প্রজারা নির্ভয়ে একান্ত আপনার ভেবে মাতৃপূজায় অংশ নেয় তাই বড়িশায় আদি চণ্ডীমণ্ডপের নাম "সাঁঝার আটচালা"(সাঁঝার অর্থে সবার)।.........
বড়িশার আটচালায় এবার বনেদীয়ানা প্রদান করবে বনেদী দুর্গাপূজার বিশেষ সম্মান
বিশেষ সম্মান কলকাতার প্রাচীনতম পরিবারকে