পীঠমালায়
দেখা যায়, কালীঘাটে সতীর
দক্ষিণ পদাঙ্গুলি পড়ে বলে অঞ্চলটি
পীঠস্থান হিসাবে চিহ্নিত করা
হয়েছে। এখানকার
দেবতা কালী ও পীঠ
রক্ষক ভৈরব নকুলেশ্বর।
চূড়ামণি তন্ত্রে বলা হয়েছে,
"নকুলেশঃ কালীঘাটে দক্ষপাদাঙ্গুলিষু চ।
সর্বসিদ্ধিকরী দেবী কালিকা তত্র
দেবতা।।"
সতী স্নেহবশত শিব-লিঙ্গরূপ ধারণ
করে কালীঘাটে নকুলেশ্বর নামে বিরাজ করছেন
এবং ব্রহ্মা এখানে একটি কালীমূর্তি
স্থাপন করেন।
হিন্দুতীর্থের মধ্যে ৫১টি পীঠস্থান
বলে চিহ্নিত। সেই
পীঠস্থানের অন্যতম হল মহাতীর্থ
কালীঘাট। পীঠস্থানগুলি
শক্তিপূজার প্রধান স্থান।
কী কারণে পীঠস্থান হল
তা পুরাণ ও তন্ত্রাদি
শাস্ত্রে বর্ণনা করা আছে। পূর্বকালে
প্রজাপতি দক্ষ হিমালয়ের পার্শ্বদেশে
সিদ্ধমহর্ষি পরিসেবিত পবিত্র হরিদ্বারে বৃহস্পতিসব
নামে যজ্ঞ বিশেষের আয়োজন
করেন এবং সেখানে ব্রহ্মর্ষি
দেবর্ষি ও দেবগণকে আমন্ত্রন
করেন। কিন্তু
তাঁর নিজের জামাই শিবের
প্রতি বিদ্বেষ থাকার জন্য তিনি
তাঁহাকে যজ্ঞে আমন্ত্রণ করেননি। দক্ষকন্যা
সতী পিতৃযজ্ঞ মহোৎসবের কথা শুনে তাঁর
পিতার গৃহে যাওয়ার জন্য
তাঁর পতি শিবের কাছে
অনুমতি প্রার্থনা করেন। সতী
পিতৃগৃহে গিয়ে দেখলেন সেখানে
রুদ্রের ভাগ নেই।
দক্ষ তাঁর কন্যার আদর
না করে শিবনিন্দা করতে
শুরু করলেন। এই
কথায় সতী অপমানিত ও
ক্রুদ্ধ হয়ে যজ্ঞে দেহ
পরিত্যাগ করেন। এই
সংবাদে মহাদেব ক্রুদ্ধ হয়ে
দক্ষের যজ্ঞ পণ্ড করেন
এবং সতীর মৃতদেহ নিজের
স্কন্ধে নিয়ে উন্মত্তের মতন
নৃত্য করতে করতে সমস্ত
পৃথিবী ভ্রমণ করতে লাগলেন। বিষ্ণু
তখন সতীর মৃতদেহ সুদর্শনচক্রের
দ্বারা খণ্ড করে ফেললেন। যে
যে স্থানে সতীর অঙ্গ
প্রত্যঙ্গ প্রক্ষিপ্ত হল সেই সেই
স্থানে মহাদেব সতীস্নেহ বশত
স্বয়ং লিঙ্গরূপে অবস্থিত হলেন। ব্রহ্মা
সেইখানে শক্তির এক এক
মূর্তি স্থাপন করলেন।
সতী অঙ্গ ৫১টি খণ্ড
হয়েছিল সুতরাং ৫১পীঠস্থান হল।
যেমন কাশীতে "কালভৈরব"-সতী হলেন দেবী
বিশালাক্ষী। উৎকলে
পড়েছিল নাভি-দেবী বিমলা,ভৈরব জগন্নাথ।
কামাক্ষায় পড়েছিল দেবীর যোনী,
ভৈরব উমানন্দ। কুরুক্ষেত্রে
পড়েছিল দেবীর দক্ষিণ পায়ের
গুলফ-দেবী হয়েছেন সাবিত্রী,
ভৈরব স্থানু।তেমনই
কালীক্ষেত্র কালীঘাটে সতীর দক্ষিণ পদের
চারটি আঙুল পড়েছিল।
তাই একান্নটি সতীপীঠ বা শক্তিপীঠের
মধ্যে কালীতীর্থ কালীঘাট একচল্লিশতম সতীপীঠ।
সুদর্শন ছিন্ন সতীঅঙ্গ নিপাতিত
হয়ে যতটুকু স্থান কালীঘাটে
পড়েছিল তা নিগমকল্পের পীঠমালায়
বর্ণিত আছে।
শ্রীমহাদেব উবাচ।
"মাতঃ
পরাৎ পরে দেবী সর্ব্বজ্ঞানময়ীশ্বরী।
ক্ষেত্রানাং কথ্যতে দেবী কালীক্ষেত্রং
বিশেষত দেব্যুবাচ।
"দক্ষিণেশ্বর মারভ্য যাবচ্চবহুলা পুরী।
ধনুরাকার ক্ষেত্রঞ্চ যোজনদ্বয় সংখ্যকং।।
তন্মধ্যে ত্রিকোণাকার ব্রক্ষ্মাবিষ্ণু শিবাত্ম্যকং।
মধ্যে চ কালিকা
দেবী মহাকালী প্রকীর্ত্তিতা।।
নকুলেশঃ ভৈরবো যত্র যত্র
গঙ্গা বিরাজিতা।
তত্র ক্ষেত্রং মহাপুণ্যং
দেবানামপি দুর্লভং।।
কাশীক্ষেত্রং কালীক্ষেত্র মভেদোপি মহেশ্বরঃ।।
কীটোহপি
মরণেমুক্তি কিং পুনর্ম্মানবাদয়ঃ।
ভৈরবী বগলা বিদা(কালী) মাতঙ্গী কমলা
তথা।
ব্রাহ্মী মাহেশ্বরী চণ্ডীচ্যাষ্ঠশক্তি বসেৎ সদা।।"
দক্ষিণেশ্বর
থেকে বহুলা(কালীঘাটের দক্ষিণবর্তী
রাজপুরের কিছু দক্ষিণ পূর্ব
আকনা গ্রামের সন্নিকট স্থান বোলপুর নামে
খ্যাত)পর্যন্ত দু-যোজন অর্থাৎ(২*৪) ক্রোশব্যাপী
এলাকাই কালীক্ষেত্র। এর
মধ্যে একক্রোশ পরিমিত ত্রিকোণাকার ক্ষেত্রের
মধ্যে কালিকাদেবী বিরাজমানা। যেখানে
নকুলেশ ভৈরব এবং গঙ্গা
বিরাজ করেন সেই স্থান
মহাপুণ্যক্ষেত্র। কাশীক্ষেত্র
ও কালীক্ষেত্র উভয়ের মধ্যে কোন
ভেদ নেই। এই
মহাপুণ্যস্থানে ভৈরবী,বগলা, মাতঙ্গী,
কমলা, ব্রাহ্মী, মাহেশ্বরী ও চণ্ডী এই
সনাতনী অষ্টশক্তি অবস্থান করেন। যে
জায়গাটিকে এখন কালীঘাট বলা
হয়, বিশেষ কোনও প্রাচীন
নাম না থাকলেও তা
যে পুরাণের "সমতট" প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল তার সপক্ষে
প্রমাণ পাওয়া যায়।
অন্যদিকে ইউরোপীয় ভূতত্ববিদ পণ্ডিতেরা দক্ষিণ বাংলার রসাতল
প্রবেশের বিষয়ে প্রমাণ দিয়েছেন। তাদের
মতে কলকাতি ও তার
কাছে জায়গাগুলি ক্রমশ নীচের দিকে
এগিয়ে গেছে। এইসব
প্রাচীন ক্ষেত্রগুলি ওপর দিক থেকে
অনেকটাই বসে গেছে।
এরদ্বারা বোঝা যায়, যে
জায়গাটি এখন কালীঘাট হিসাবে
চিহ্নিত করা আছে, তার
অনেক নীচের জমিতে অনেকদিন
আগে মানুষেরা বসবাস করতেন।
ক্রমশ রসাতলব চলব যাওয়ায়
জায়গাটি মানবশূন্য হয়ে যায়।
ফলে এই জায়গাটি আবার
মানুষের বাসযোগ্য হওয়ার সময় লাগে।
শোনা যায়, পূর্বে ভবানীপুর
গ্রামে এই দেবীর এক
মন্দির ছিল। নাম
শুনেই সেটা অনুমান করা
যায়। পরে
সাবর্ণ চৌধুরীরা কালীঘাটে আদি বা বুড়িগঙ্গার
ওপর দেবীর জন্য এক
মন্দির তৈরী করে দেন। সেই
সময় থেকেই কালীঘাট হিন্দুদের
বড় তীর্থস্থান। পূর্ণেন্দু
পত্রী 'ছড়ায় মোড়া কলকাতা'য় লিখেছেন, এঁদের(সাবর্ণ চৌধুরীদের জমিদারির)
মধ্যেই কালীঘাট। বুড়িগঙ্গার
তীরে এঁরাই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন
কালীঘাটের মন্দির। সামাজিক
নিয়মে বাঁধে বলে এনারা
পুজো করতে পারেন না
তাই দূর দেশ থেকে
ডেকে আনা হল হালদার
গোষ্ঠীর ব্রাহ্মণদের। সেই
থেকে মন্দিরে হালদাররা সেবাইত। মন্দির
যখন পত্তন হয়, চৌরঙ্গী
আজকের মতন আলো-ঝলমল
ছিল না। নাম
চৌরঙ্গীনাথ। সাবর্ণ
চৌধুরীরা এই প্রতিমাকে প্রতিষ্ঠা
করেছিলেন মন্দিরে।
উল্লেখযোগ্য যে, শ্রীকামদেব গঙ্গোপাধ্যায়ের
চিঠিতে কালীঘাটের গঙ্গাকে আদিগঙ্গা বলা হয়েছে।
তখন গঙ্গার ধারা কালীঘাটের
সামনে দিয়ে একটাই ছিল। আদিগঙ্গা
নাম দেখে মনে হয়
এটা সাবর্ণ জমিদার বংশেরই
লেখা। চিঠিতে
লেখা হয়েছে কালীঘাট "মাগুরা"
পরগণায়। ১৮৫৫
সালে ইংরেজরা যখন পঞ্চান্নগ্রাম ও
কালীঘাটে জরিপ ও জমাবন্দী
করতে আসেন তখন সাবর্ণ
চৌধুরীরা কালীঘাটকে মাগুরা পরগণার অন্তর্গত
জমিদারী বলে দাবী করেন।
লক্ষ্মীকান্ত
গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় পুত্র গৌরহরি।
গৌরহরির চারসন্তান গন্ধর্ব, জনার্দন, শ্রীমন্ত এবং কাশীশ্বর।
নিমতার কবি কৃষ্ণরাম দাস
"কালিকামঙ্গল" কাব্যে (রচনাকাল ১৬৭৬খ্রিঃ) আত্মপরিচয় দিতে গিয়ে গৌরহরির
চার সন্তানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন-
"অতি
পুণ্য (ময়) ধাম সরকার
সপ্তগ্রাম
কলিকাতা পরগণা তার।
ধরণী নাহিক তুল
জাহ্নবীর পূর্বকূল
নিমতা নামেতে গ্রাম
যার।।
বসতি করয়ে তথি সদাচারী
শুদ্ধমতি
ধীর ধরাদেবগণ সুখে।
হেন দেখি মনে লয়
নারদ আদি মুনিচয়
অবতার কৈল কলিযুগে।।
চৌধুরী
গন্ধর্বারি বলে নাহি অধিকারি
অধিকার অনে ধরণী।
দহিত অহিতবন ছিল দারা
হুতাশন
ভার ভরে প্রতাপে
তরণী।।
সাবর্ণ
চৌধুরী সব একমুখে কিবা
নিব
অশেষ মহিমা অতি
স্থির।
শ্রীশ্রী
শ্রীমন্ত রায় সবলোকে গুণ
গায়
ধার্মিক যেমন যুধিষ্ঠির।।...."
"তন্ত্রচূড়ামণি"
ছাড়া "গঙ্গাভক্তিরঙ্গিনী" গ্রন্থেও পদাঙ্গুলির কথা পাওয়া যায়ঃ-
"কালীঘাটে
পড়ে দক্ষপদাঙ্গুলি মূল।
নকুলেশ
ভৈরব সেখানে সানুকুল।
কালীঘাটে
দেবীর পায়ের কটি আঙুল
পড়েছিল, ভারতচন্দ্রই সম্ভবত প্রথম জানানঃ-
"কালীঘাটে
চারিটি অঙ্গুলি ডানি পার।
নকুলেশ ভৈরব কালিকা
দেবী তার।।"
পীঠমালা
তন্ত্রের মতে কালীঘাটে দেবীর
দক্ষিণ পায়ের আঙুল পড়েছিল। একই
গ্রন্থে লেখা হয়েছেঃ-
"কালীঘাটে
মুণ্ডপাতঃ ক্রোধীশে ভৈরবস্তথা।
দেবতা জয়দুর্গাখ্যা নানা
ভোগ প্রদায়িনী।।"
যশোরেশ্বর
প্রতাপাদিত্যের সমসাময়িক বৌদ্ধ পরিব্রাজক কবিরাম
"দিগ্ধিজয়প্রকাশ"
গ্রন্থে জানিয়েছেনঃ-
"পীঠমালাতন্ত্রগ্রন্থে
সতীদেব্যাঃ শরীরতঃ।
বামভূজাঙ্গুলিপাতো
জাতো ভাগীরথীতটে।"
রূপচাঁদ
পক্ষী "কলিকাতা বর্ণন" প্রসঙ্গে লিখেছেনঃ- সতীর কনিষ্ঠ অঙ্গুলি
কলিকাতাতে আছেন কালী, মা
কালী, কলকাত্তাওয়ালী সর্বমঙ্গলী, শ্যামা মায়ের কি
বৈভব। প্রত্যহ
হয় উৎসব, ঈশানেতে কালভৈরব
শ্রীপ্রভু নকুলেশ্বর।
তাম্রলিপ্তের
বর্গভীমা মন্দিরের সঙ্গে কালীঘাটের কালীর
নাম "ভবিষ্য পুরাণ"এর
ব্রহ্মখণ্ডে দ্বাবিংশ অধ্যায়ের নবম শ্লোকে পাওয়া
যায়ঃ-
"তাম্রলিপ্ত-প্রদেশে চ বর্গভীমা বিরাজতে।
গোবিন্দপুরপ্রান্তে
চ কালী সুরধনীতটে।।"
বিহারীলাল
আঢ্যের মতে পাল যুগে
কালীঘাট নামকরণ হয়েছিল, কালীক্ষেত্র
অন্তত ২০০০ বৎসর পূর্বে
লোকে বিদিত। কিন্তু
তখন কালীঘাট বলে ইহার নামকরণ
হয় নি। বঙ্গদেশের
পাল বংশীয় নৃপতিগণ বৌদ্ধ
ধর্মাক্রান্ত ছিলেন। সেই
সময় হিন্দু বণিকগণ এই
স্থানের নাম কালীঘাট নামকরণ
করেছিলেন।
ভবিষ্যপুরাণীয়
ব্রহ্মখন্ডে লিখিত আছে-"গোবিন্দপুর
প্রান্তে চ কালী সুরধুনী
তটে।"
কালীক্ষেত্র
কালীঘাট বহু প্রাচীন তীর্থস্থান। ষোড়শ
শতাব্দী থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর
বহু তীর্থ বিষয়ক গ্রন্থে
কালীঘাটের নামোল্লেখ করে দেবী কালিকার
উদ্দ্যেশ্যে প্রণাম নিবেদন করা
হয়েছে। কিছুকিছু
তথ্যের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয় কালীঘাট বা
কালীঘট্ট বা কালীক্ষেত্র বল্লাল
সেন যুগেরও প্রাচীন।
তীর্থ কালীঘাটের মন্দির
সৃষ্টি ও মূর্তি স্থাপনের
ব্যাপারে বাংলার প্রাচীন জমিদার
বংশীয় সাবর্ণ রায় চৌধুরী
পরিবারই উল্লেখযোগ্য ভুমিকা পালন করেছিলেন
১৫৬৯সাল থেকে-
"লক্ষ্মীর আরাধ্য কালী, যাহে
স্থিরামতি।
অদূরে বড়িশা তথা
করিল বসতি।
যথাকালে কালীঘাটে কালিকার স্থিতি।
লক্ষ্মীনাথে কুলভাঙ্গে সাবর্ণে মতি।।
মানসিংহ গুরুপুত্র করে অন্বেষণ
কালীঘাটে পায় নাম লক্ষ্মীনারায়ণ....।।"
সাবর্ণ
রায় চৌধুরী পরিবার পশ্চিমবঙ্গের
এক প্রাচীন কৃষ্টিসম্পন্ন জমিদারবংশ।
আশ্বিন মাসের লক্ষ্মীপুজোর
তিথি হিন্দুর পঞ্জিকায় অতি শুভদিন।
৯৭৭বঙ্গাব্দের(১৫৭০সাল) এই দিন অপরাহ্ন
৪/১৫ মিনিটের সময়
লক্ষ্মীকান্তের জন্ম হয়।
লক্ষ্মীপূর্ণিমার দিন জন্ম বলে
তাঁর নাম লক্ষ্মীনারায়ণ বা
লক্ষ্মীকান্ত। লক্ষ্মীকান্তের
জন্মের আগে কামদেব ওরফে
জীয়া গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী
পদ্মাবতীদেবীর সন্তান না হওয়ায়
আত্মীয়-স্বজনগন বললেন, কালীঘাটে গিয়ে
তাদের পারিবারিক দেবতা দেবী কালিকার
কাছে পুত্রকামনায় তিনদিন তিনরাত্রি ধরে
সাধনার জন্য। তৃতীয়দিন
রাত্রিকালে কালীমন্দিরের পুষ্করিণীর জলের ওপর এক
আলোর ছটা দেখতে পান
পদ্মাবতীদেবী। পরদিন
ওই পুকুরে স্নান করতে
গিয়ে তিনি জলের তলায়
সতীর দেহাংশ দেখতে পান
ও দৈববাণী শ্রবণ করেন।
সেই দৈববাণী শুনে দেবীর প্রধান
পুরোহিত আত্মারাম ঠাকুর পুকুরের তলা
থেকে দেবীর সতীঅংশের উদ্ধার
করেন। ১৫৭০সালে
আষাঢ় মাস স্নান পূর্নিমা
তিথিতে একটি লাল পট্টবস্ত্রের
উপর প্রতিষ্ঠিত হলেন দেবী কালিকা। শুরু
হল সতীর নিত্য পূজাপাঠ। প্রসঙ্গত
উল্লেখযোগ্য ১৫৬৯সালে হালিশহর থেকে সাবর্ণ গোত্রীয়
দম্পতি যখন কালীঘাটে এলেন
তখন কালীঘাটের প্রধান পুরোহিত ধ্যানমগ্ন
মহাযোগী শ্রীমৎ আত্মারাম ঠাকুরের
থেকে তন্ত্রমতে দীক্ষা নিলেন জীয়া
গঙ্গোপাধ্যায় এবং পদ্মাবতীদেবী।
প্রসঙ্গত
লক্ষ্মীকান্তের জন্মের পর তার
মা পদ্মাবতীদেবী মারা গেলেন।
লক্ষ্মীকান্তকে কালীঘাটের রেখে কামদেব বেরিয়ে
পড়লেন। শেষে
তিনি কাশীতে ছিলেন ও
কামদেব ব্রক্ষ্মচারী রূপে ভারত বিখ্যাত
সাধকে পরিনত হয়েছিলেন।
কামদেবের পুত্র লক্ষ্মীকান্ত বাড়তে
থাকেন তাঁর গুরু মহাত্মা
আত্মারাম ঠাকুরের কাছে। পাঁচটি
আঞ্চলিক ভাষায় শ্রেষ্ঠত্বের পর্যায়ে
উন্নীত হন। বঙ্গে
প্রতাপাদিত্যকে দমন করে মানসিংহ
লক্ষ্মীকান্তের বিদ্যাবত্তা এবং যশোর তালুকের
নায়েব থাকাকালীন প্রশাসনিক ও সামরিক ক্ষেত্রে
তার দক্ষতার বিষয়ে অবগত হলেন। সেই
সমস্ত কথা শুনে মানসিংহ
কালীঘাটে লক্ষ্মীকান্তের সাথে দেখা করেন
এবং তাকে বলে যে
তার পিতা কামদেবের শিষ্য
তিনি(মানসিংহ), পিতার নির্দেশে তিনি
তাঁকে(লক্ষ্মীকান্তকে) গুরুদক্ষিনা
প্রদান করতে চান।
লক্ষ্মীকান্তের ব্যবহার, পাণ্ডিত্য, উপস্থিতবুদ্ধি দেখে অভিভূত হয়ে
মানসিংহ তাকে "মজুমদার"(রাজস্ব কমিশনার) পদমর্যাদায়
ভূষিত করলেন।
মাগুরা, খাসপুর, কলিকাতা, পাইকান, আনোয়ারপুর, আমীরাবাদ, হাবেলীসহর ও হাতিয়াগড়।
"জায়ো
সর্ব্ব শ্রাস্ত্রবিদ্ পাণ্ডিত্যে অসীম।
তা দেখি মানসিংহ করে
ভক্তি অনুপম।।
তাই মানসিংহ তাঁর অতিশয় ভক্ত।
তাঁর দীক্ষা শিক্ষায় ত্রিতাপে
অনাসক্ত।।
গুরুর
আশীষে শিষ্য মানবে সিংহ। ভারতজয়ী
হল যে রাজা মানসিংহ।।
কি কাজে গুরুর তোষ?
ইঙ্গিতে তা শুনি।
তব ভ্রাতৃ অন্বেষণ কর
যাদুমণি।।
মানসিংহ
গুরুপুত্র করে অন্বেষণ।
কালীঘাটে
দেখা নাম লক্ষ্মীনারায়ণ।।
শিষ্ট,
শান্ত, সুবুদ্ধি, তেজিয়ান অতি।
বালক হলেও বিজ্ঞ আছিল
সুমতি...।।"
কালীক্ষেত্রের কালীমূর্তির প্রথম আবিষ্কারের বিষয়ে
নানা তথ্য পাওয়া যায়। বর্তমান
কালীমন্দিরের অনতিদূরে পর্ণকুটীরে কোন ব্রাহ্মণ বানপ্রস্থ
অবলম্বনপূর্বক তপস্যা করছিলেন।
একদিন সন্ধ্যায় ভাগীরথী সলিলে সন্ধ্যা বন্ধনাদি
পাঠ করছেন এমন সময়
অনতিদূরে এক আলোকজ্যোতির সন্ধান
পান। সেই
আলোকজ্যোতি দেখে ব্রাহ্মণের কৌতুহল
বৃদ্ধি হল এবং তিনি
ওইদিকে(কালীকুণ্ডের) গিয়ে দেখলেন ওই
দিব্য আলো নিঃসৃত হয়েছে। পরে
কালীর প্রত্যাদেশ মতে জানতে পারলেন
যে পূর্বকালে সুদর্শন ছিন্ন হয়ে তাঁরই
অঙ্গ ওইস্থানে পতিত হয়েছিল।
তখন সেই ব্রাহ্মণ অনুসন্ধান
করতে করতে অদূরে স্বয়ম্ভু
নকুলেশ্বর রয়েছেন দেখতে পেলেন। এবং
তিনি ওই স্থানে উক্ত
প্রস্তরবৎ সতীঅঙ্গ যত্নপূর্বক রেখে কালীমূর্তি ও
নকুলেশ্বরের পূজা করতে শুরু
করেছিলেন।
আবারও অন্যমতে ব্রহ্মানন্দগিরি
এবং আত্মারাম ঠাকুর মহামূল্যবান কষ্টিপাথরে
দক্ষিণাকালী মাতার রূপদান করেছিলেন
সাবর্ণ গোত্রীয় রায় চৌধুরীদের কুলমাতা
মা ভুবনেশ্বরীর রূপদেখে ১৫৭০সালে। ওই
শিলার মধ্যেই দেবী-কালিকা
আবদ্ধা আছেন। কালীঘাট
পুণ্য পীঠস্থানরূপে আত্মপ্রকাশের মূলে রয়েছেন মহাতপস্বী
দুই সাধক আত্মারাম ঠাকুর
এবং ব্রহ্মানন্দগিরি। আর
রয়েছেন কামদেব ও পদ্মাবতীদেবীর
সাধনা ও স্বপ্নাদেশ।
শিবপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর "প্রাচীন কলিকাতা" বইতে লিখেছেন, পনেরোশ
শতাব্দীর শেষভাগে বা ষোড়শ শতাব্দীর
গোড়ার দিকে গোবিন্দপুএ(তখনকার
কালীঘাট) মা কালীর পূজার্চনা
শুরু হয়। এক্ষেত্রে
আরও একটি কথা উল্লেখ্য
যে সাবর্ণ গোত্রীয় লক্ষ্মীকান্ত
গঙ্গোপাধ্যায়(রায় চৌধুরী) মোগল
সম্রাট জাহাঙ্গীরের থেকে জায়গির প্রাপ্তির
পর তিনিই কালীঘাটের
মন্দির তৈরী ও দেবীর
সেবার জন্য ব্যবস্থা করে
দেন। বলাবাহুল্য
যে লক্ষ্মীকান্ত রায় চৌধুরী ৫৯৫বিঘা
৪কাঠা ২ছটাক জমি দান
করেছিলেন।
শিবপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় আরও উল্লেখ করেছেন,
গোবিন্দপুরের পুরনো নাম কালীঘাট
এবং বর্তমানে যেখানে জি.পি.ও(জেনারেল পোস্ট
অফিস) আছে সেখানেই ছিল
মা কালীর মন্দির।
প্রমথনাথ মল্লিক তাঁর "কলিকাতার
কথা" বইতে(আদিকাণ্ড পৃষ্ঠা১-২) লিখেছেন, কালীদেবী
কবে কলকাতা হইতে কালীঘাটে
যান তাহার সবিশেষ তথ্য
অবগত হওয়া দুরূহ তবে
এই পর্যন্ত শোনা যায় বর্তমান
পানপোস্তার উত্তরে দেবীর মন্দির
ও পাকা ঘাট ছিল। সেই
পুরাতন পাথরে বাঁধান ঘাট
হইতে বর্তমান পাথুরিয়াঘাটার নাম হয়েছে যদিও
এই মতেরও বিরুদ্ধাচরণ করেছেন
ধর্মানন্দ মহাভারতী।
ব্রহ্মানন্দের জন্মের আগে বিপ্রদাস
পিপলাইয়ের "মনসাবিজয়"ও সমসাময়িক কবিকঙ্কন
মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর "চণ্ডীমঙ্গলে" কলিকাতা এবং কালীঘাটের উল্লেখ
পাওয়া যায়। এইরূপ
প্রবাদ আছে যে বড়িষার
সাবর্ণ চৌধুরী গোষ্ঠী বাংলার
দক্ষিণ অংশের জমীদারী প্রাপ্ত
হয়ে কালীঘাটের কালীমূর্তির আবিষ্কার করেন।
কালীর সেবায়েতগণের মধ্যে
ভুবনেশ্বর চক্রবর্তী কুলব্রহ্মচারীর নাম প্রথম পাওয়া
যায়। ভুবনেশ্বর
যোগ সাধনায় রত থাকতেন
এবং পীঠস্থান নির্জন কালীঘাটে গঙ্গাতীরে
বাস করে কালীর সেবা
করতেন। একদিন
এক গরিব বিধবা ব্রাহ্মণী
মন্দিরে দেবীদর্শনে আসেন। সঙ্গে
অষ্টাদশী অবিবাহিত কন্যা। নাম
যোগমায়া। ভুবনেশ্বরগিরি
এই কন্যার রূপসৌন্দর্যে মুগ্ধ
হয়ে তাঁকে ভৈরবীরূপে গ্রহণ
করেন। তন্ত্রে
ভৈরবী রাখার নির্দেশ আছে। কিছুদিন
পরে যোগমায়া এক কন্যার জন্ম
দিলেন। নবজাতা
শিশুকন্যার নাম রাখলেন উমা। উমার
সাথে খানিয়ান গ্রাম নিবাসী ভবানীদাস
চক্রবর্তীর বিবাহ হয়।
কারণ ভুবনেশ্বরগিরি ধ্যানমগ্ন অবস্থায় অদ্ভূত দৈববানী পেলেন-"বৎস,ভুবনেশ্বর এবার
উমার বিয়ে দিয়ে আমার
পূজা কর। সন্ন্যাসীদের
রেহাই দিয়ে সংসারীর হাতে
তুলে দে।"
ভুবনেশ্বরগিরির
অনুরোধে ভবানীদাস কালীঘাটে থেকে গেলেন।
দেবীর পূর্বের আদেশমতোন ভুবনেশ্বরগিরি বৈষ্ণব ভবানীদাসের ওপর
দক্ষিণা কালিকার পূজা-আরতির ভার
দিলেন। এখন
থেকেই শুরু হল গৃহীভক্তের
হাতে কালীমাতার পূজার্চনা। সন্ন্যাসী
ভুবনেশ্বরগিরিই কালীঘাটের শেষ মোহান্ত।
কালীঘাটের বর্তমান মন্দির তৈরী করেন
বড়িশার সাবর্ণ গোত্রীয় সন্তোষ
রায় চৌধুরী। সন
১২০৯সালের অর্থাৎ ১৮০২।৩ খ্রীঃ দাখিলী
ভূমির তায়দাদে দেখা যায় যে
১১৫৭সালে অর্থাৎ ১৭৫১ সালে
মনোহর ঘোষাল ও কালীঘাটের
তদানীন্তন সেবাইত গোকুলচন্দ্র হালদারকে
সন্তোষ রায় চৌধুরী জমীদারীর
নানাস্থানে বিস্তর ভূমি দান
করেন। ২৪পরগণায়
সন্তোষ রায়ে অসীম প্রভুত্ব
ছিল। সন্তোষ
রায় তদানীন্তন দক্ষিণ প্রদেশের সমাজ
অধিপতি ছিলেন। শেষ
অবস্থায় সন্তোষ রায় কালীঘাটের
কালীর বর্তমান বড় মন্দির নির্মাণ
করেন। সন্তোষ
রায়ের মৃত্যুর পর প্রায় ৫।৬
বৎসর পরে সাবর্ণ গোত্রীয়
রাজীবলোচন রায় চৌধুরী ১৮০৯সালে
কালীঘাটের বর্তমান মন্দির স্থাপন করেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য বড়িশার সাবর্ণি জমিদারগণের
পূর্ব পুরুষ কেশবচন্দ্র রায়
চৌধুরী গঙ্গাতীরে আপন জমীদারী ভক্ত
অরণ্য মধ্যে জপ তপাদি
করতেন। কালীঠাকুরাণীর
প্রত্যাদেশ মতে বর্তমান কালীর
প্রস্তর খোদিত মুখমণ্ডল প্রাপ্ত
হয়ে ওই কুণ্ডুর পশ্চিম
তীরে স্থাপন করেন এবং
কালীর সেবার জন্য উক্তস্থানের
জমি নির্দিষ্ট করে দিয়ে মনোহর
ঘোষাল নামক এক ব্যক্তিকে
পরিচারক নিযুক্ত করেন। কালীঘাটের
বন কেটে তিনি কালীর
ইমারত নির্মাণ করে দিয়েছিলেন।
যে স্থানটিকে এখন কালীঘাট বলা
হয় তা পূর্বে বড়িশার
প্রসিদ্ধ ভূম্যধিকারী সাবর্ণি চৌধুরীদের জমিদারি ভুক্ত চাঁদপুর গ্রাম
বলে পরিচিত ছিল।
পরবর্তীকালে বড়িশার সাবর্ণি জমীদার
কেশবচন্দ্র রায় চৌধুরী মহাশয়ের
ভ্রাতা কাশীশ্বর রায় চৌধুরী ওই
স্থানে একটি ক্ষুদ্র মন্দির
নির্মাণ করেন।
কালীঘাটের মন্দিরের মধ্যে এখন কেবল
কালীর প্রাপ্ত মুখমণ্ডল প্রতিষ্ঠিত আছে এমন নয়,
এই এখন স্বর্ণাদি নির্মিত,
বহুমূল্যের অলঙ্কারাদিতে পরিশোভিত হয়েছে। এইসমস্ত
অলংকার বহু ধনাঢ্য লোকের
প্রদত্ত। প্রথমে
খিদিরপুর নিবাসী স্বর্গীয় দেওয়ান
গোকুলচন্দ্র ঘোষাল মহাশয় কালীর
চারিটি রৌপ্যময় হস্ত করে দেন। বর্তমান
চারটি স্বর্ণ নির্মিত হাত
প্রদান করেন কলকাতার প্রসিদ্ধ
বাবু কালীচরণ মল্লিক মহাশয়।
চারহাতের চারগাছি সুবর্ণ কঙ্কণ চড়কডাঙা
নিবাসী কালীমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতামহ রামজয় বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রদান করেন। কালীর
স্বর্ণজিহ্বাটি পাইকপাড়াধিপতি রাজা ইন্দ্র চন্দ্র
সিংহ বাহাদুর প্রদান করেন।
এইরূপ বহু স্বর্ণালংকার বহু
ধনাঢ্য লোকের দ্বারা প্রদান
করে।
কালীর মন্দিরের পশ্চিম
দিকে শ্যামরায় বিগ্রহের অধিষ্ঠান মন্দিরও দোলমঞ্চ। কালীর
সেবাইত হালদারগণ পূর্বপুরুষ ভবানীদাস বৈষ্ণব ছিলেন।
শ্যামরায় বিগ্রহ তিনি কালীঘাটে
নিয়ে আসেন। ১৭২৩সালে
মুর্শিদাবাদের জনৈক কাননগু কালীঘাটে
এসে শ্যামরায়ের জন্য ছোটো ঘর
প্রস্তুত করে দেন।
১৮৪৩ খ্রীঃ বাওয়ালীর জমিদাণের
পুর্বপুরুষ উদয়নারায়ণ মণ্ডল মহাশয় শ্যামরায়ের
ছোটো ঘর ভেঙে বর্তমান
মন্দির নির্মাণ করে দেন।
দোলযাত্রার দিন শ্যামরায়ের প্রধান
উৎসব। পূর্বে
শ্যামরায়ের দোলমঞ্চ ছিল না তাই
মন্দিরেই দোল পালন করা
হত। ১৮৫৮
খ্রীঃ সাহানগর নিবাসী মদন কলে
নামক এক ব্যক্তি শ্যামরায়ের
দোলমঞ্চ নির্মাণ করেন।
অতুলকৃষ্ণ
রায়ের মতে সতী-অঙ্গ
বর্তমান চৌরঙ্গী অঞ্চলে পড়েছিল, তাই
তার নাম চৌরঙ্গী।
যদি এই মত সত্য
বলে ধরা হয় তাহলে
দেবীর মূর্তি ও মন্দির
কালীঘাটে প্রতিষ্ঠিত না হয়ে চৌরঙ্গী
অঞ্চলেই হত। তপন
চট্টোপাধ্যায়ের "পলাশির যুদ্ধ" লিখেছেন,
কালীঘাটের ভদ্রকালী কালিকা কালীক্ষেত্রের অধিষ্ঠাত্রী
দেবী । নকুলেশ্বর
মহাদেবের সাথে তিনি সানন্দে
বিরাজ করছেন। পূর্ণেন্দু
পত্রী "ছড়ায় মোড়া কলকাতা'য়"লিখেছেন, এঁরা(সাবর্ণ চৌধুরীদের জমিদারি)মধ্যেই কালীঘাট।
বুড়িগঙ্গার তীরে এঁরাই কালীঘাটের
মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা। সামাজিক
নিয়মে বাধে বলে নিজেরা
পুজো করতে পারেন না। তাই
দূর দেশ থেকে ডেকে
আনা হল হালদার গোষ্ঠীর
ব্রাহ্মণ। সেই
থেকে ঐ হালদাররাই মন্দিরের
সেবাইত।
তথ্যসূত্রঃ
১.
"বঙ্গীয় সাবর্ণ কথা-কালীক্ষেত্র
কলিকাতা"-ভবানী রায় চৌধুরী
২.
"কালীঘাটের পুরাতত্ত্ব"- সূর্যকুমার চট্টোপাধ্যায়
৩.
"৫১পীঠ"- হিমাংশু চট্টোপাধ্যায়
৪.
"কালীরূপের তাৎপর্য"- প্রদীপ রায় চৌধুরী
৫.
"অমৃততীর্থ কালীঘাট"- শৌভিক গুপ্ত
৬.
"কলিকাতার সেকালের ও একালের"- হরিসাধন
মুখোপাধ্যায়
৭.
"সম্বন্ধ নির্ণয়"-লালমোহন বিদ্যানিধি
৮.
"প্রাচীন কলিকাতা"- শিবপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়
৯.
"লক্ষ্মীকান্ত"-
অতুলকৃষ্ণ রায়
১০.
"পীঠমালা"-শিবচন্দ্র ভট্টাচার্য
১১.
"কালীঘাট-ইতিবৃত্ত"- উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়
১২.
"পশ্চিমবঙ্গের কালী ও কালীক্ষেত্র"-
দীপ্তিময় রায়
১৩.
"কলকাতা বিচিত্রা"- রাধারমণ রায়
১৪.
"কালীক্ষেত্র দেবীপিকা"- সুকুমার চট্টোপাধ্যায়
***উল্লিখিত তথ্য
এবং চিত্রের সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত বনেদীয়ানা পরিবারের নামে। প্রকাশক বা লেখকের অনুমতি
ছাড়া এই তথ্য বা চিত্রের কোন রকম কোন প্রতিলিপি করা যাবে না, কোন ফোটোকপি বা কোন রকমের
কোন ইলেকট্রিক মাধ্যমে এই তথ্য বিনা অনুমতিতে নেওয়া যাবে না। এই শর্ত লঙ্ঘিত হলে বনেদীয়ানা
পরিবার উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ***
তথ্যসূত্র সংগ্রহেঃ
শ্রীমান্ শুভদীপ রায় চৌধুরী
No comments:
Post a Comment