Sunday, September 15, 2019

বর্ধমান নবগ্রামের ব্যাঘ্রবাহিনী দুর্গাঃ- বনেদীয়ানায়


ঐতিহ্যের ইতিহাসপর্বঃ
 আজ প্রকাশিত হল বর্ধমান নবগ্রামের ব্যাঘ্রবাহিনী দুর্গাপুজোর ইতিহাস ইতিহাস লিপিবদ্ধ করলেন বনেদীয়ানা পরিবারের সদস্যা শ্রীমতী দেবযানী বসু চলুন দেখা যাক সেই পুজোর ইতিহাস
বর্ধমান নবগ্রামের ব্যাঘ্রবাহিনী দুর্গাঃ- বনেদীয়ানায়

 সিংহবাহিনী দশভুজা দেবী দুর্গা প্রচলিত সর্বাধিক প্রচলিত হলেও বাংলা বাংলার বাইরে ব্যাঘ্রবাহিনী দেবীও দেখা যায় বিশেষত উত্তর পশ্চিম ভারতে ব্যাঘ্র-এর ওপর অষ্টভুজা দুর্গার পুজোই বেশি হয় 'শেরওয়ালি' মা নামেই তিনি জনমানসে পরিচিত উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ির বিখ্যাত বংশের দেবী ব্যাঘ্রবাহনা কোচবিহার রাজবংশের দেবীর পায়ের কাছে সিংহের সাথে ব্যাঘ্রের অবস্থান পশ্চিম বর্ধমানের নবগ্রামেও বহুবছর ধরে হয়ে চলেছে ব্যাঘ্রবাহিনী দেবীর আরাধনা
 অজয় নদের পাশে নবগ্রাম, মূলত কয়লাখনি অঞ্চল, শোনা যায় বিরাট রাজাদের রাজ্যভুক্ত ছিল এই গ্রাম অজ্ঞাতবাসে থাকার সময় পাণ্ডবরা এসেছিলেন এখানে বর্তমানে এখানে দুটি পারিবারিক পুজো হয় একটি চক্রবর্তীদের, অন্যটি চট্টোপাধ্যায়, মুখোপাধ্যায় ভিন্ন গোত্রীয় চক্রবর্তীদের দুটি পুজোর মূর্তির গঠন সম্পূর্ণ আলাদা চক্রবর্তীদের মূর্তি সিংহবাহনা, আর তিনশরিকের মূর্তিতে মা বাঘের পিঠে দণ্ডায়মানা সম্ভবত দুই পরিবারের বিবাদের জেরেই পাল্টে যায় মূর্তির গঠন চক্রবর্তীদের দুর্গার বামপাশে থাকে লক্ষ্মী, ডাইনে সরস্বতী তিনশরিকের পুজোয় বামে সরস্বতী, ডাইনে লক্ষ্মী ব্যাঘ্রবাহনা দেবীর রঙ তপ্তকাঞ্চনবর্ণা শোনা যায় ৩৫০ বছর পূর্বে চক্রবর্তীরাই দুর্গাপুজোর প্রচলন করেন শুধুমাত্র অসুরদলনী দুর্গামূর্তি থাকত লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গনেশ পরে যুক্ত হয় রথযাত্রায় কাঠামোয় মাটি পড়ে বংশপরম্পরায় কুমোর, ঢাকি আসেন পরিবারের সমস্ত সদস্যরা একসাথে উপভোগ করেন পুজোর আনন্দ
ব্যাঘ্রবাহনা দেবীর পুজো হয় পি.এম.বাগচী পঞ্জিকা মতে সপ্তমীতে চালকুমড়ো, সন্ধিপুজোয় শ্বেতছাগ মহানবমীতে কৃষ্ণছাগ বলি হয় গৃহদেবতা রঘুনাথ জীউকে ভোগদানের পর দেবীকে ভোগ দেওয়া হয় পঞ্চব্যঞ্জন সহযোগে ভোগ দেওয়া হয় ভোগে কচু, কুমড়োর তরকারি আবশ্যক সঙ্গে থাকে পায়েস মিষ্টি দশমীর সকালে অপরাজিতা পুজোর পর ঘট নবপত্রিকা বিসর্জন হয় দেবীকে দই, চিড়ে খাইয়ে বিদায় দেওয়া হয় এরপর সধবারা সিঁদুর খেলেন নবপত্রিকা বিসর্জনের সময় বাড়ির সধবা মহিলারা দেবীকে বরণ করেন, হাতে দেন গুড়পুঁটুলি আর কড়ি এই গুঁড়পুটুলি আসলে শালপাতায় মোড়া একটি করে গুড়ের নাড়ুকড়ি হল পথখরচা. পরিবারের সদস্যরা মনে করে মায়ের শ্বশুরগৃহে ফিরে যাওয়ার সময় সঙ্গে কিছু মিষ্টি দেওয়া বাঞ্ছনীয় এই বাড়িতে মহাষ্টমীর দিন ঢাক বাজে না সকলের ঘরের গৃহলক্ষ্মীরা কদিন পুজোমণ্ডপে একসাথে পুজো পান দশমীতে রাতে শোভাযাত্রা সহকারে দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয়
তথ্যসূত্র- শ্রী অজয় চট্টোপাধ্যায়
সাহায্য- শ্রী স্বাগত চট্টোপাধ্যায়
লিপিবদ্ধে- শ্রীমতী দেবযানী বসু(সাংবাদিক)




No comments:

Post a Comment