Tuesday, October 22, 2019

দীপান্বিতায় ঠনঠনিয়া কালীবাড়িঃ- কলকাতা


দীপান্বিতাপর্বঃ-

আর বাকী ৩দিন, আগামী রবিবার কার্তিক মাসের অমাবস্যা, কালীপুজো বনেদীয়ানা' বহুদিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে দেবী কালিকার আরাধনাপর্ব বনেদীয়ানা' সদস্যা শ্রীমতী দেবযানী বসু এবং সদস্য শ্রীমান্ শুভদীপ রায় চৌধুরী লিখছেন কলকাতা তথা বঙ্গের প্রাচীন কালীমন্দির, বাড়ির কালীপুজোর ইতিহাস আজও প্রকাশিত হল উত্তর কলকাতার ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির ইতিহাস, লিখলেন শুভদীপ ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি কলকাতার কালীমন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম মন্দির, বহু ভক হয় কালীপুজোর দিন, হয় রীতিনীতি মেনে দীপান্বিতা কালীপুজো চলুন দেখা যাক সেই মন্দিরের ইতিহাস রীতিনীতি
দীপান্বিতায় ঠনঠনিয়া কালীবাড়িঃ- কলকাতা

 বহুবছর ধরেই পুজো হয়ে আসছে এই কালীবাড়িতে, পুজো হয় নিষ্ঠার সাথে ৩১৬বছরেরও প্রাচীন এই মন্দির, আজও সেই প্রাচীন রীতিনীতি মেনেই পুজো হয় ঠনঠনিয়াতে সকাল বেলায় মায়ের মঙ্গলারতির মাধ্যমে পুজো শুরু হয় তারপর মায়ের পুজো সকালে শুরু হয় নৈবেদ্য সহকারে দুপুরবেলা অন্নভোগ দেওয়া হয় এই কালীবাড়িতে মাছ সহযোগে সন্ধ্যায় সন্ধ্যারতি শুরু হয় মায়ের মন্দিরে
 এই ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল ফলহারিণী কালীপুজো কার্তিক মাসের অমাবস্যার কালীপুজো এই দুই দিন রাত্রে মায়ের নিরামিষ ভোগ হয় নিরামিষ ভোগের মধ্যে থাকে লুচি, কচুরি, পাঁচ রকমের ভাজা, ছানার তরকারি, পনিরের তরকারি, ধোকার তরকারি, মিষ্টান্ন ইত্যাদি দীপাবলীর অমাবস্যা তিথিতে মায়ের রাতের বিশেষ পূজাতে ফল, নতুন বাসন, কাপড়, সাজসজ্জা সমস্ত কিছুই নিবেদন করা হয় ঠনঠনিয়া কালীবাড়িতে অমাবস্যার পুজোতে দুইটি নৈবেদ্য নিবেদন হয় যা সেই প্রাচীন কাল থেকেই হয়ে আসছে- একটি মায়ের নৈবেদ্য একটি অমাবস্যার নৈবেদ্য
ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির দেবী মৃন্ময়ী, সেই ৩১৬বছর আগে যে মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আজও সেই মূর্তিই বর্তমান প্রত্যেক বছর পুজোর আগে মায়ের অঙ্গরাগ করা হয় সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় ঠাকুর শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেব এই ঠনঠনিয়া কালীবাড়িতে আসতেন, পুজো করতেন শুধুমাত্র রামকৃষ্ণদেবই নন, তাঁর পরিবারের বহু সদস্যই আসতেন মায়ের কাছে এই ঠনঠনিয়া কালীবাড়ির মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শঁঙ্কর ঘোষ মহাশয়(১৭০৬সাল),কিন্তু মৃন্ময়ীকে প্রতিষ্ঠা করেন উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী ১৭০৩সালে তখন এই ঠনঠনিয়া ছিল সুতানুটি মহাশ্মশান, সেই সময় উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী মায়ের মৃন্ময়ী প্রতিমা, মায়ের ঘট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেই মূর্তি দেবীঘট আজও বর্তমান ঠনঠনিয়াতে
 দেবীর আদেশে উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী মায়ের মন্দির সেবাকাজ দিয়ে গিয়েছিলেন শঙ্কর ঘোষ মহাশয়কে, সেই থেকে এই পরিবার মায়ের সেবাকাজ করে আসছেন বংশপরম্পরায় বহু ভক্তসমাগম হয় কালীপুজোর দিন কলকাতার প্রাচীন কালীমন্দিরের মধ্যে এই মন্দির অন্যতম এই মন্দিরে কালীপুজোর দিন ষোড়শোপচারে দেবীর পুজো, আরতি, বলিদান, ভোগ নিবেদন ইত্যাদি প্রাচীন রীতি মেনেই পুজো হবে কালীপুজোর দিন কালীপুজোর পরের দিন মায়ের মন্দির থেকে দেবীর ভোগপ্রসাদ বিতরন করা হয়, বলা যায় এক মহাসমারহে এবং নিষ্ঠার সাথে দেবী পূজিতা হয়ে আসছেন ঠনঠনিয়া কালীবাড়িতে
তথ্যসূত্র লিপিবদ্ধেঃ- শুভদীপ রায় চৌধুরী



No comments:

Post a Comment