দীপান্বিতাপর্বঃ- ৬
আজ প্রকাশিত হল বাংলাদেশের এক কালীমন্দিরের ইতিহাস। দীপাবলীর আর কিছুদিনের অপেক্ষা, আলোর উৎসব এসেই গেল। বাংলাদেশের ময়মনসিংহ-এর বড় কালীমন্দিরের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করলেন বনেদীয়ানা পরিবারের সদস্যা শ্রীমতী দেবযানী বসু। চলুন দেখা যাক সেই মন্দিরের ইতিহাস।
দীপান্বিতায় ময়মনসিংহের বড় কালীমন্দিরঃ- বাংলাদেশ
৩০০বছর পূর্বের কথা। বাংলায় তখন নবাবী আমল। আলিবর্দী খাঁ-র শাসন। আজকের বাংলাদেশের ময়মনসিংহ তখন বৃহৎ পরগনা জেলা। ব্রহ্মপুত্র নদে মাছ ধরতে নেমেছে এক ধীবর। হঠাৎ জাল তুলতে গিয়ে প্রচণ্ড ভারী ঠেকল তার। তখন সে ভেবে বসল বোয়াল জাতীয় বড় মাছ পড়েছে জালে। টেনে তুলে দেখে এক কালী বিগ্রহ। তিনি চিৎকার করে ওঠেন 'জয় মা কালী'বলে। এর জন্যই প্রতিষ্ঠার পর মন্দিরের নামকরণ হয় শ্রীশ্রী জয় কালীমাতার মন্দির। এবার তিনি কি করবেন এই বিগ্রহ নিয়ে? সেদিন রাতেই স্বপ্ন দেখেন এক বিশাল বটবৃক্ষ। পরদিন সেই বটবৃক্ষের কাছে যেতেই দেখা পা একদল তান্ত্রিকের। তাদের হাতেই সমর্পণ করেন বিগ্রহ। তান্ত্রিকরা বৃক্ষের নীচে একটি ছোট্টো ঘরে মাকে প্রতিষ্ঠা করেন এবং নিয়মিত পূজার্চনা করতে থাকেন। প্রথম প্রতিষ্ঠার সেই বেদী আজও বর্তমান।
পরবর্তীকালে গড়ে উঠেছে মন্দির। প্রস্তরনির্মিত বিগ্রহে মা এখানে দক্ষিণাকালী। উচ্চতা ৩ফুট। পদতলে শিব লম্বালম্বিভাবে শায়িত। প্রতিদিন সকালে পূজা, দুপুরে অন্নভোগ ও রাতে শয়নারতির মাধ্যমে মায়ের নিত্যপূজা সম্পন্ন হয়। মায়ের প্রতিষ্ঠা দিবস ৮ই জ্যৈষ্ঠ। সেদিন বলিদান হয়। বোয়ালমাছের পদ সহ অন্নভোগ নিবেদন হয়। প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল ও শনিবার বলি হয়ে থাকে। রাসপূর্ণিমাতেও বিশেষ পূজা, বলিদান ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়। এছাড়া দীপাবলী উৎসব পালিত হয় ধুমধাম করে। বহু ভক্তের সমাগম সবসময় মন্দিরে হয়েই থাকে।
মা কালীর সঙ্গে রয়েছেন মন্দিরে শিবলিঙ্গ, রয়েছে মনসা মন্দির, হনুমান মন্দির সহ বহু মন্দির। আগামী ২৭শে অক্টোবর দীপাবলীর সন্ধ্যায় আলোর মালায় সেজে উঠবে মন্দির চত্বর এবং সঙ্গে থাকবে ভক্তিমূলক পুষ্পাঞ্জলি।
কৃতজ্ঞতাস্বীকারঃ- শ্রী প্রমিত মজুমদার
তথ্যসূত্র লিপিবদ্ধেঃ- শ্রীমতী দেবযানী বসু
No comments:
Post a Comment