ঐতিহ্যের হৈমন্তীপর্বঃ- ৬
বেশ কিছুদিন ধরে বনেদীয়ানা'য় শুরু হয়েছে জগদ্ধাত্রীপুজো নিয়ে বিশেষ পর্বালোচনা। আজ প্রকাশিত হল সমাজদার বাড়ির রাজরাজেশ্বরী পূজা, লিখলেন দেবযানী বসু। চলুন দেখা যাক সেই ইতিহাস।
ঐতিহ্যের হৈমন্তীপর্বঃ- সমাজদার বাড়ির রাজরাজেশ্বরী
বাংলাদেশের ময়মনসিংহ অঞ্চল নিবাসী চণ্ডীচরণ ভট্টাচার্য্য ছিলেন পরম ধার্মিক। প্রতিবছর দশমীতে মা দুর্গার বিসর্জনের সময় তাঁর আকুল লাগে। নদীর দিকে চেয়ে অঝোরে কাঁদেন আর ভাবেন মা কেন তাঁর গৃহে সপরিবারে পুজো নিতে আসেন না। একদিন তিনি দেখেন এক নবীনা বালিকা এসে বলছে যে আগামী শুক্লা নবমীতে দেবীর সপরিবার মূর্তি এনে পূজা কর। গঙ্গার ঘাটে গেলে দেখবি তিনটি কাঠ ভাসছে, তাই দিয়ে তৈরি হবে মূর্তি।
১০০বছর আগে শুরু সেই পুজো। বাংলাদেশের পুজো হয় এখন উত্তর কলকাতায়। এখানেও ঘটেছে অলৌকিক ঘটনা। পূজার জল আনতে গিয়ে দেখা যায় একটি কাঠ ভেসে আসছে, সেই কাঠ দিয়েই মূর্তি তৈরি হয়ে আসছে।
মূর্তির বিশেষত্ব সত্যই অনন্য। দেবী চতুর্ভূজা, সিংহ পৃষ্ঠে আসীনা। জগদ্ধাত্রীরূপ হলেও দুপাশে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গনেশ মিলব সপরিবার উপস্থিতি। তাই তিনি রাজরাজেশ্বরী। এক চালচিত্রে নবপত্রিকা থাকেন। বাড়ির অঙ্গনেই স্নান হয় নবপত্রিকার। দেবীর দুই হাতে থাকে খড়্গ ও ত্রিশূল। অন্য দুই হাতে থাকে চক্র ও ধনুক। নবমীতে তিনদিনের পুজো হয়। সপ্তমীতে মাছ ভোগ, অষ্টমীতে নিরামিষ ভোগ এবং নবমীতে নিরামিষ পাঁঠার মাংস সহযোগে দেবীকে ভোগ নিবেদন করা হয়। সন্ধিপূজায় ভাজা মিষ্টি, এক কিলো চাল, গোটাফল দেওয়া হয়। দশমীতে বিদায়ের আগে দেওয়া হয় পান্তাভাত, ইলিশমাছ, ডালের বড়া ইত্যাদি। দশমীতে দর্পন বিসর্জনের পর অপরাজিতা পূজা হয়।
কৃতজ্ঞতাস্বীকারঃ- শ্রী সায়ন সমাজদার
তথ্যসূত্র লিপিবদ্ধেঃ- দেবযানী বসু
No comments:
Post a Comment