ঐতিহ্যের
ইতিহাসপর্বঃ
আজ প্রকাশিত হল
হাওড়ার বড়াল বাড়ির দুর্গাপুজোর
রীতিনীতি। কী
ভাবে পুজো হল এই
পরিবারে? দেখা যাক সেই
ইতিহাস। লিপিবদ্ধ
করলেন শ্রীমান্ শুভদীপ রায় চৌধুরী।
ঐতিহ্যের বাড়িরপুজোঃ- বড়াল পরিবার(হাওড়া)
হাওড়া
অঞ্চলের রাজ বল্লভ সাহা
লেনের বড়াল বাড়ির দুর্গাপুজো
শুরু হয় পরিবারের এক
সদস্যের মাতৃমূর্তি নির্মাণের মধ্য দিয়ে।
পরিবারের পৈতৃক নিবাস পুরানো
হলেও এই বাড়ির পুজো
খুব পুরানো তা নয়। তবুও
হাওড়ার বাড়ির
পুজোর তালিকায় এই বাড়ি একটি
স্থান দখল করে আছে।
বড়াল পরিবারে পুজো হয় বৈষ্ণব
মতানুসারে। দুর্গাপুজোর
ষষ্ঠীর দিন বিল্ববৃক্ষে দেবীর
বোধন হয়। বাড়িতেই
স্নান হয় কলাবউ'এর
সপ্তমীর দিন। এক্ষেত্রে
একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল যে
গাছটিতে কলাবউ স্থাপনা হয়,
সেটিকে সারবছর বাড়িতেই যত্নে
রাখা হয়। এই
পরিবারে সন্ধিপুজোর সময় বাড়ির সধবা
মহিলারা ধুনো পোড়ানোর রীতি
পালন করে থাকেন।
সন্ধিপুজোয় অর্থাৎ অষ্টমীর আর
নবমীর সন্ধিক্ষণে চালকুমড়ো বলিদান করি হয়।
এছাড়া সন্ধিপুজোতে ১০৮পদ্ম
ও ১০৮টি প্রদীপ প্রজ্জ্বলনেরও
প্রথা রয়েছে এই পরিবারে। মহানবমীতে
নবগ্রহ হোম হয় এই
পরিবারে। বড়াল
বাড়িতে তিনদিনই অর্থাৎ সপ্তমী, মহাষ্টমী
এবং মহানবমীতে খিচুড়ি, লুচি, পোলাও, ভাজা,
নানান রকমের তরকারি, পায়েস,
মিষ্টান্ন ইত্যাদি নিবেদন করা হয়
পাথরের পাত্রে। দশমীর
দিন অপরাজিতা পুজোর পর মায়ের
এবার কৈলাশে ফেরার পালা। দশমীর
দুপুরবেলা বাড়ির আত্মীয়স্বজন ও
পরিচিতজনের আপ্যায়নের পর শুরু হয়
দেবীবরণ।
বাড়ির
মহিলারা দেবীকে বরণ করেন,
শুরু হয় সিঁদূরখেলা পর্ব। তারপর
দেবীকে নিয়ে রওনা হন
পরিবারের সদস্যরা গঙ্গায় বিসর্জনপর্বে।
প্রতিমা নিরঞ্জন করে এসে বাড়ির
সকল সদস্য ঠাকুরদালানে উপস্থিত
হয়, তারপর প্রবীণ সদস্যের
পা ছুঁয়ে এবং মিষ্টিমুখের
মাধ্যমে শেষ হয় এ
বছরের শারদীয়া উৎসব। বড়াল
পরিবারের পৈতৃক বাসস্থান ও
ঠাকুরদালানটি খুবই প্রাচীন।
তাদের পূর্বপুরুষ হঁরিচরণ বড়াল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন
সেই দালান। সারাবছর
সদস্যরা নিজের কাজে ব্যস্ত
থাকলেও পুজোর সময়, মায়ের
আগমন হেতু বড়াল বাড়ির
সদস্যরা আনন্দ যজ্ঞে মেতে
ওঠেন। প্রাচীন
পুজো না হলেও একটা
রীতি ঐতিহ্য এবং বাড়ির
পুজোর এক বিশেষ নিষ্ঠার
ছবি ফুটে ওঠে এই
বড়াল বাড়িতে।
কৃতজ্ঞতাস্বীকারঃ-
শ্রী বরুণ বড়াল মহাশয়
তথ্য লিপিবদ্ধেঃ শ্রীমান্ শুভদীপ রায় চৌধুরী
No comments:
Post a Comment