Saturday, April 6, 2019

মহারাজাধিরাজ কৃষ্ণচন্দ্রের রাজরাজেশ্বরী


ঐতিহ্যের ইতিহাসপর্বঃ 
 আজ "বনেদীর-বনেদীয়ানা"   মহারাজাধিরাজ কৃষ্ণচন্দ্রের রাজরাজেশ্বরীর ইতিহাস লিখলেন শ্রীমান্ শঙ্খ

 বনেদীয়ানা পরিবার অনন্য ইতিহাসের খোঁজ নিয়ে আসতে সক্ষম, তাদের ইতিহাস চর্চা শুধুমাত্র পূজা নয়, তার সাথে মন্দির, স্থাপত্য এবং ভাস্কর্যের অসামান্য নিদর্শনের খোঁজ করাও মূল উদ্দেশ্য তাই আজ প্রকাশিত হল রাজরাজেশ্বরীর ইতিহাস


মহারাজাধিরাজ কৃষ্ণচন্দ্রের রাজরাজেশ্বরী কৃষ্ণনগর, নদীয়া

অন্নপূর্ণা উত্তরিলা গাঙ্গিনীর তীরে
পার করো বলিয়া ডাকিলো পাটনীরে।।
সেই ঘাটে খেয়া দেয় ঈশ্বরী পাটনী
ত্বড়ায় আনিল নৌকা বামা স্বর শুনি।।
ঈশ্বরীরে জিজ্ঞাসিল ঈশ্বরী পাটনী
একা দেখি কুলবধূ কে বটো আপনি।।
পরিচয় না দিলে করিতে না পারি পাড়
ভয়করি কিজানি কে দেবে ফেরফার।।
ঈশ্বরীরে পরিচয় কহেন ঈশ্বরী
বুঝহো ঈশ্বরী আমি পরিচয় করি।।
বিশেষণে সবিশেষ কহিবারে পারি
জানহো স্বামীর নাম নাহি ধরে নারী।।
গোত্রের প্রধান পিতা মুখবংশ জাত
পরমকুলীন স্বামী বন্দ্যবংশ খ্যাত।।
পিতামহ দিলা মোরে অন্নপূর্ণা নাম
সকলের পতি তেঁই পতি মোর বাম।।
অতি বড় বৃদ্ধ পতি সিদ্ধিতে নিপুন
কোনো গুণ নাহি তার কপালে আগুন।।
কুকথায় পঞ্চমুখ কণ্ঠ ভরা বিষ
কেবল আমার সঙ্গে দ্বন্দ্ব অহর্নিশ।।
গঙ্গা নামে সতা তার তরঙ্গ এমনি
জীবনস্বরূপা সে স্বামীর শিরোমণি।।
ভূত নাচাইয়া পতি ফেরে ঘরে ঘরে
না মেরে পাষাণ বাপ দিলা এমন বরে।।
অভিমানে সমুদ্রেতে ঝাঁপ দিলা ভাই
যে মোরে আপনা ভাবে তারি ঘরে যাই।।...........
......আমি দেবী অন্নপূর্ণা প্রকাশ কাশীতে
চৈত্রমাসে মোর পূজা শুক্লা অষ্টমীতে।।
কতদিন ছিনু হরি হোড়ের নিবাসে
ছাড়িলাম তার বাড়ী কোন্দলের ত্রাসে।।
ভবানন্দ মজুমদার নিবাসে রহিব
বর মাগো মনোনীত যাহা চাহ দিবো।।....

আনুমানিক ১৭৫২ খ্রীস্টাব্দে রচিত 'অন্নদামঙ্গল'-কাব্যগ্রন্থের কবি নদীয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের সভাকবি "রায়গুণাকর" ভারতচন্দ্রের বর্ণনা অনুযায়ী, অযাচিত কোন্দলের কারণেই নাকি দেবী অন্নপূর্ণা 'হরিহোড়'-এর নিবাস ত্যাগ করে 'ভবানন্দ মজুমদার'-এর গৃহে আশ্রয় নে' বলা ভালো, ভবানন্দের গৃহকেই আপন করে নে'
ইতিহাস বলছে, কৃষ্ণনগর রাজপরিবারের আদিপুরুষ ভবানন্দ মজুমদার(মৌজদার>মজমাদার>মজুমদার) নাকি মুঘলসম্রাট জাহাঙ্গীরের ফরমানে রাজা হয়েছিলেন তিনি বাড়ীতে অন্নপূর্ণা পূজা করতেন সেই অন্নপূর্ণা পূজাই পরবর্তীতে শারদীয়া দুর্গোৎসবে রূপান্তরিত হয় তা যাই হোক, বংশের আদিপুরুষের কাছে যেহেতু জগন্মাতা অন্নপূর্ণা রূপেই প্রথম ধরা দিয়েছিলেন তাই কৃষ্ণচন্দ্রের একান্ত অনুরোধে, রাজপরিবারের ধর্মীয় ঐতিহ্যকেই সভাকবি ভারতচন্দ্র রায় বাঙলার পলিমাটি, বাৎসল্যরস আর দৈনন্দিন জীবনযাত্রার পটচিত্রেই তুলে ধরলেন, গিরিরাজের 'সোনার ভ্রমরী' পার্ব্বতী 'ভাঙরভোলা জামাই' মহেশ্বরের অপূর্ব গাথা..... "অন্নদামঙ্গল কাব্যগ্রন্থ"- আহ্লাদে আপ্লুত হয়ে মহারাজ সভাকবিকে "গুণাকর" উপাধিতে ভূষিত করেন
রাজপরিবারের ইতিহাসের পাতা থেকে জানা যায়, রাজা ভবানন্দ মজুমদার ফরমান পাওয়ার পরে মাটিয়ারিতে রাজধানী স্থাপন করেন ঐখানের ভিটেতেই প্রথম মহোৎসবের সূচনা হয়পরবর্তীকালে রাজা ভবানন্দ মজুমদারের উত্তরপুরুষ রাজা রাঘব রায় মাটিয়ারি থেকে রেউই গ্রামে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন রাজা রাঘব রায় পৌরাণিক চরিত্র "রেবতী"- নামানুসারে রাজধানীর নামকরণ করেন, "রেবতী" পরবর্তীতে তা অপভ্রংশে "রেউতি" বা "রেউই" তে রূপান্তরিত হয় ঐতিহাসিকদের মতে, রাজা রাঘব রায়ের পুত্র রুদ্র রায়, প্রকৃতিতে কৃষ্ণভক্ত ছিলেন সেইকারণে, তিনি রাজধানীর নতুন নামকরণ করেন, "কৃষ্ণনগর" যাইহোক, রুদ্র রায় তৎকালীন অবিভক্ত বঙ্গদেশের ঢাকা থেকে 'আলাল বক্স' নামক এক বিখ্যাত স্থপতিকে ফটক, বড়দুয়ার, চকবাড়ী, কাছারিবাড়ী, আস্তাবল, হাতিশালা, নহবতখানা, ঠাকুরদালান, বাহিরমহল, অন্দরমহল সমেত আজকের কৃষ্ণনগর রাজবাড়ী "কমপ্লেক্স" স্থাপন করেন পরিাবরের অন্নপূর্ণা পূজা, দুর্গোৎসবে রূপান্তরিত হওয়ার সঠিক সময়কাল নিয়ে কিছুটা দ্বন্দ্ব আছে তবে 'কথা বলাই বাহুল্য যে, রাজা রুদ্র রায়ের প্রপৌত্র মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের আমলেই এই পারিবারিক দুর্গোৎসব সর্বসাধারণের মধ্যে সার্বজনীনতা লাভ করে. সাধ করে মহারাজ ইষ্টদেবীর নাম দেন "রাজরাজেশ্বরী" আজও রায় পরিবারের কুলদেবী এই নামেই পরিচিতা এবং পূজিতা কৃষ্ণনগর রাজবাড়ীর ঠাকুরদালান বা দেবীপ্রতিমা আর পাঁচটা রাজ/বনেদী পরিবারের থেকে পৃথক বৈশিষ্ট্যবাহী এখানে লক্ষ্য করা যায়, চারদিকে পঙ্খ অলঙ্কৃত খিলান থামে ঘেরা নাটমন্দিরের মধ্যস্থলে একটি গর্ভগৃহের আদলে খিলান ঘেরা মণ্ডপে দুর্গাদেবীর বেদী স্থাপিত অর্থাৎ, দেবীকে নাটমন্দিরের বারান্দা ধরে চারদিক থেকেই প্রদক্ষিণ করা যায় হলফ করে বলা যায়, এরকম স্থাপত্যশৈলীর দুর্গাদালান বঙ্গীয় বনেদীয়ানার ইতিহাসে আর একটিও নেই শুধু তাই' নয়, আয়তনের দিক থেকেও এতবড় ঠাকুরদালান হয়তো চাইলেও খুঁজে পাওয়া ভার...! সারা ঠাকুরদালানের গা'ঘিরে অজস্র-অসংখ্য সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ভাস্কর্য্য দেখে এককথায় '' হয়ে যেতে হয় সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আজ তা নষ্ট হতে বসেছে
দেবী রাজরাজেশ্বরী' বিগ্রহও আর পাঁচটি সাবেকি দুর্গাপ্রতিমার থেকে রূপবৈচিত্রে একটি স্বতন্ত্র ধারা মেনে তৈরী হয়ে আসছে প্রায় দশ(১০)হাত উচ্চতাবিশিষ্ট দেবীর চালচিত্র অর্দ্ধচন্দ্রাকার উল্টোরথের দিন দেবীর কাঠামোর প্রধান বাঁশটি(যেটি দিয়ে দেবীবিগ্রহের মেরুদণ্ড তৈরী হয়) পূজো করে, প্রতিমা নির্মাণের কাজ শুরু হয় ঐদিনের পূজা পরিবারের সদস্যদের কাছে 'পাটপূজা' নামে পরিচিত রাজত্বের আমলে নাকি ১০৮ঘড়া গঙ্গাজল ১০৮সের মাটির প্রয়োজন 'তো, দেবীর বিগ্রহ বেদী নির্মাণের কাজে মাটি আর জল আনা 'তো নবদ্বীপের গঙ্গার ঘাট থেকে দেবী রাজরাজেশ্বরী দুর্গা এখানে অতসীপুষ্প বর্ণা ' দেবীর গায়ের রঙ অস্তাচলগামী সূর্য্যের মতো ঘোর কমলাবর্ণ দেবীর মুখভঙ্গিমা চোখের উজ্জ্বলতা এতটাই জীবন্ত যে, সেই আয়তনেত্রার দিকে বেশীক্ষণ তাকিয়ে থাকাও যায়না..! মাতৃমূর্তির সামনের দু'টি হাতই যা চেহারা সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে তৈরী করা হয় বাকী আট()টি হাত অপেক্ষাকৃত ছোটো দেবী এখানে যতটা না মাতৃরূপে প্রকাশিতা, তারও বেশী যোদ্ধারূপেই অধিক আদৃতা দেবীর সাথে সাথে পার্শ্বদেব/দেবীগণও যোদ্ধারূপেই বিরাজ করেন সকলেরই পরিধানে থাকে 'বর্ম' সাজের ক্ষেত্রেও এখানে সচরাচর 'ডাক সাজ'- দেবীকে সাজানো হয়না স্থানীয় ভাষায় দেবীর সাজ 'বেদেনি ডাকসাজ' নামে পরিচিত আগে রাজরাজেশ্বরীকে সোনার অলঙ্কারে মুড়ে দেওয়া 'তো এখন রাঙতা মাটির অলঙ্কারেই দেবী সজ্জিতা ' নিরাপত্তার কারণে রাজ আমলের সোনার গয়না নাকি এখন ব্যাঙ্কে রক্ষিত অর্দ্ধচন্দ্রাকৃতি চালচিত্রের মাঝখানে পঞ্চানন বসে আছেন; একদিকে দশাবতার এবং অন্যদিকে দশমহাবিদ্যা চিত্রিত দেবীর বাহন পৌরাণিক সিংহ(ঘোড়াদাবা) মহিষাসুরের গায়ের রঙ সবুজ
রাজবাড়ীর নহবতখানায় শারদোৎসবের সানাই বেজে ওঠে ভাদ্রের শুক্লা প্রতিপদের কাকভোরে মহানবমী পর্যন্ত সাধক রামপ্রসাদ রচিত বহু আগমনীর সুর সানাইয়ের সুরমূর্চ্ছনায় সুদূর অতীতের স্মৃতুমেদুরতাকে টেনে আনে যেন হারিয়ে যাওয়া রামরাজত্বের গৌরবোজ্জ্বল দিনগুলো নতুন করে পলেস্তারা খসে পড়া রাজবাড়ীর দেওয়ালের আনাচে-কানাচেতে উঁকি দেয়...! সেদিন থেকেই নিত্য অগ্নিসেবা ষোড়শোপচারে দেবীর বার্ষিক পূজার শুভারম্ভ হয়; চলে মহানবমী অব্দি রাজবাড়ীর অন্দরে ঠাকুরঘরে প্রতিষ্ঠিত অষ্টধাতু নির্মিত "শ্রীযন্ত্র" ঐদিন ঠাকুরদালানে আনা হয় তাতেই দেবীর নিত্য আরাধনা চলতে থাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঢাকে কাঠি পরে শারদীয়া শুক্লা ষষ্ঠীর দিন একসময়ে এই পূজোয় আনুষাঙ্গিক উপচারের মধ্যে '১০৮' সংখ্যাটি খুবই তাৎপর্য্যপূর্ণ ছিল এরমধ্যে মাটি জলের পরিমাণের কথা আগেই বলেছি ওগুলি ছাড়াও, আগে ১০৮ জন ঢাকী, ১০৮ টি সাদাপদ্ম, ১০৮ টি লালপদ্ম, ১০৮ টি প্রদীপ, ১০৮ টি ছাগ ইত্যাদি উৎসর্গ করা 'তো এখন, আর্থিক প্রতিবন্ধকতার কারণে সেসবের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে; প্রদীপ পদ্মফুল ছাড়া দেবীর সপ্তমী থেকে মহানবমীবিহিত পূজাকাণ্ডের প্রতি দফায় কাঁচা পাকা দু'প্রকার নৈবেদ্য এবং ভোগ নিবেদিত হয় পূজোর তিনদিনেই দেবীর উদ্দেশ্যে যথাসাধ্য ভোগের আয়োজন করা হয় সপ্তমীতে সাতরকম ভাজা সমেত খিচুড়ি, তরকারি, মাছ, চাটনি নিবেদন করা হয় মহাষ্টমীর পূজোয় পোলাও, ছানার ডালনা, আটরকম ভাজা, ক্ষীর তৈরী হয় মহানবমীর ভোগে 'রকমের ভাজা, ভাত, ডাল, চচ্চড়ি, তরকারি, তিনরকম মাছ ইত্যাদি রাঁধা হয় ঠাকুরঘরের হেঁসেলে প্রতিদিনের শীতলপূজায় সন্ধীপূজায় লুচি,ভাজা, তরকারি, সুজির পায়েস উৎসর্গ করা হয় পশুবলিদানের নিয়ম এখন 'বাড়ীতে একেবারেই নিষিদ্ধ পরিবর্তে কুষ্মাণ্ড ইত্যাদি বলিদান হয় কৃষ্ণচন্দ্রের আমলে, বলিদানের পূর্বমুহূর্তে নহবতখানায় ঘোষণার মাধ্যমে "অগ্নিহোত্রী বাজপেয়ী রাজরাজেন্দ্র মহারাজাধিরাজ নবদ্বীপাধিপতি মহাশয় কৃষ্ণচন্দ্র রায় বাহাদুর"-এর ঠাকুরদালানে উপস্থিতির কথা জানানো 'তো এখন সেসব অতীতের পৃষ্ঠা, কোথায় ছিঁড়ে চলে গেছে...!
এখানে, সন্ধীপূজা দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে বহু লোকসমাগম হয় প্রথামাফিক, পূজোয় ১০৮ টি প্রদীপ জ্বালিয়ে ১০৮ সংখ্যক পদ্মের অপরাজিতার মালায় দেবীকে সাজানো হয়
মহানবমীর অস্তগামী সূর্য্যের সাথেই নহবতের সানাইয়ের উচ্ছসিত সুরও যেন বিষাদময়তায় ঢলে পড়ে
বিজয়াদশমীর সকালে প্রথমেই পারিবারিক 'যাত্রামঙ্গল' অনুষ্ঠানে সকল পুরুষ সদস্যগণ যোগ দেন বিশেষ কিছু মঙ্গলময় বস্তু যেমনঃ সবৎস গাভি, বৃষ, হাতি, ঘোড়া, জীবন্ত মাছ, দধি ইত্যাদি সাজিয়ে রাখা হয় দেবী রাজরাজেশ্বরীর সামনে পূর্বে গোশালা থেকে গাভী, বৃষ, আস্তাবলের ঘোড়া হাতিশালা থেকে হাতি আনা 'তো এখন সেসবই মাটির প্রতীকী মূর্তিতে দেবীর সামনে সাজিয়ে রাখা হয় পারিবারিক সংস্কার অনুযায়ী এসব দেখে যাত্রা করলে নাকি উদ্দেশ্য সফল হয় এরপরেই স্ত্রীআচার মেনে সিঁদুরখেলা শুরু হয় পরিবারের মহিলা সদস্য ছাড়াও স্থানীয়, দূরদূরান্তের বহু সধবা আসেন রাজরাজেশ্বরীকে সিঁদুর পড়াতে বরণের পরে নবপত্রিকা সহ দেবীকে কাঁধে চড়িয়ে বিসর্জ্জনের শোভাযাত্রা বের হয় আগে, গঙ্গায় বিসর্জ্জনের ব্যবস্থা ছিলো এখন পারিবারিক দীঘিতেই প্রতিমা নবপত্রিকা নিরঞ্জন হয় এরপরে প্রথানুযায়ী, রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য বোধনের বেলতলায় একটি কাঁচামাটি নির্মিত শত্রুর প্রতীকী মূর্তিকে তীর-ধনুক দিয়ে বধ করে থাকেন
আবার এক বছরের অপেক্ষা পুনরুজ্জীবিত হতে চাওয়া রাজবাড়ী চত্তর যেন চোখ মেলে ভালো করে তাকানোর আগেই বিষাদের অন্ধকার রাত্রিতে নীরব আর্তনাদে বিসর্জিত হয়...!
এই পূজোয় নেই কোনো আধুনিকতা, নেই কোনো প্রচারমাধ্যমের ঢক্কানিনাদ আছে শুধু জীর্ণ ভূর্জপত্রে লেখা কিছু ঐতিহ্যের গরিমা পবিত্রতায় ভরা আভিজাত্যের মৃদুমন্দ সৌরভ সেই রামও নেই.... আর তাঁর রাজত্বও নেই..... কিন্তু তাঁর রাজরাজেশ্বরী আছে কালের করালগ্রাসকে সদর্পে পদদলিত করে মোহময় জগতের, জাগতিক আপেক্ষিকতাও যেন মহামায়ার ভ্রূকুটি কটাক্ষ'কে উপেক্ষা করার সাহস করতে পারেনি দেবী যেন নিজেই নিজের গরিমায় কিংবদন্তী হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন, নিস্তব্ধ ঠাকুরদালানের প্রতিটা কোনে, প্রতিটা কড়িকাঠে বাস করা স্তব্ধ হয়ে থাকা সময়ের অজানা কাহিনী শোনানোর জন্য
দূর থেকে নজরে আসা, রাজবাড়ীর প্রধান ফটক, আগাছায় ভরা প্রাঙ্গণ যেন কত সুখ-দুঃখের কথাই না বলতে চায়.....!
তাইতো আজও দেবীর টানে, মহামায়ার টানে, অনন্তকোটি ব্রহ্মাণ্ড প্রসবিনী জগন্মাতার টানে শতসহস্র বাধা অতিক্রম করে মোহময় জীব ছুটে আসে প্রাণের আর্তি জানাতে.......! স্নেহময়ীর দুয়ারে এই আর্জি নিয়েই, "আমার সন্তান যেন থাকে দুধেভাতে।।"
তথ্যসূত্র এবং চিত্রঋণঃ শ্রীমান্ শঙ্খ





No comments:

Post a Comment