ঐতিহ্যের
ইতিহাসপর্বঃ
আজ বনেদীয়ানায় প্রকাশিত
হল হাওড়ার কদমতলার চট্টোপাধ্যায়
পরিবারের শ্রীশ্রীঅন্নপূর্ণা পূজা। পরিবারের
সদস্য শ্রীমান্ সাহেব চট্টোপাধ্যায় তিনি
বনেদীয়ানাকে জানালেন তাদের পুজোর ইতিহাস
ও ঐতিহ্যের কথা। সেই
ইতিহাসের খোঁজ নিয়ে এলেন
পরিবারের সদস্য শ্রীমান্ শুভদীপ
রায় চৌধুরী। তাহলে
আজ দেখা যাকে চট্টোপাধ্যায়
পরিবারে কী ভাবে এই
পুজোর সূত্রপাত এবং কী কী
নিয়ম রয়েছে পুজোতে।
১৯৮০ সালে চট্টোপাধ্যায় পরিবারের
পুত্রবধু শ্রীমতী সরশী চট্টোপাধ্যায় তিনি
দেবী পূজার প্রবর্তন করেন,
আজ এই পুজোর বয়স
প্রায় ৩৯বছর অতিক্রান্ত। দেবী
তাঁকে স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন সেই স্বপ্নাদেশে দেবীর
নির্দেশেই পুজোর শুরু এই
পরিবারে। একদিন
সরশীদেবী স্বপ্নে দেখছেন তিনি মা
অন্নপূর্ণার ভোগ রান্না করছেন,
এবং মা তাঁকে নির্দেশ
দিচ্ছেন তিনিও যেন তাঁর
পরিবারে দেবীর পুজোর সূত্রপাত
ঘটান। তখন
তিনি তার বাড়িতে অন্নপূর্ণাপূজা
শুরু করেন।
কথায় কথায় সাহেব
বাবু বললেন মায়ের আগমনের
আগে তারা বুঝতে পারেন
এবং দেবীও ইঙ্গিত দেন
যে তিনি আবারও প্রতিবছরের
মতন এবারও তাদের বাড়িতে
আসছেন। সাহেব
বাবুর ঠাকুমা শ্রীমতী দীপা
চট্টোপাধ্যায়ের থেকে তিনি শোনেন
যে পুজোর আগে নূপুরের
শব্দ, ধূপের গন্ধ ইত্যাদি
পাওয়া যেত, যা ইঙ্গিত
করে যে মা আসছেন। তখন
পরিবারের সদস্য(সাহেব বাবুর
দাদু) মায়ের জন্য নূপুর
নিয়ে আসেন।এমন
নানান ঘটনা রয়েছে এবং
মৌখিক ইতিহাস রয়েছে এই
চট্টোপাধ্যায় পরিবারের পুজোয়।
সম্পূর্ণ শাক্তমতে পুজো হয় এই
পরিবারে। একদিনেই
অষ্টমীর পুজো ও নবমীর
পুজো হয় এই পরিবারে। সমস্ত
নিয়ম মেনে নিষ্ঠার সাথে
পুজো হয় এই পরিবারে। পুজোর
আগের দিন অধিবাসপর্ব হয়। পরিবারে
কুমারিপুজোরও রীতি রয়েছে নবমীর
দিন। সন্ধিক্ষণে
সন্ধিপূজারও প্রচলিত ধারা রয়েছে এই
পরিবারে। চট্টোপাধ্যায়
পরিবারের প্রতিমা আসেন কলকাতার কুমোরটুলি
থেকে, প্রতিমাশিল্পীঃ শ্রীমতী চায়না পাল মহাশয়া।
চট্টোপাধ্যায় পরিবারে দেবীকে সমস্ত ধরনের
গয়না পড়ানো হয়।
সোনার মুকুট, মানতাসা, সোনার
বালা, সোনার চুর, সীতাহার,
নূপুর, কানে সোনার দুল
ইত্যাদি নানান অলংকারে সাজানো
হয়। পরিবারে
দেবীকে অন্নভোগই প্রদান করা হয়। ভোগে
থাকে- সাদাভাত, পোলাও, পাঁচ রকমের
ভাজা, তরকারি, চাটনি, পায়েস, নানান
রকমের মিষ্টান্ন ইত্যাদি। এছাড়া
হোম, ১০৮দীপদান ইত্যাদি নানান রীতি রয়েছে
এই অন্নপূর্ণা পূজায়।এই পরিবারে কুমারিপুজোও হয়।
চট্টোপাধ্যায় পরিবারের পুজো করেন কুলপুরোহিত শ্রী পিন্টু চট্টোপাধ্যায়। দশমীর দিন কনকাঞ্জলি প্রথাও রয়েছে এই পরিবারে। দশমীর দিন দেবীকে পান্তাভাত, কচুরশাক ইত্যাদি ভোগ নিবেদন করা হয়। এই ভাবে নিয়ম পালন করে নিষ্ঠার সাথে পূজিতা হন হাওড়ার কদমতলার চট্টোপাধ্যায় পরিবারের দেবী অন্নপূর্ণা।
কৃতজ্ঞতাস্বীকারঃ
শ্রীমান্ সাহেব চট্টোপাধ্যায়
তথ্যসংগ্রহেঃ
শ্রীমান্ শুভদীপ রায় চৌধুরী
No comments:
Post a Comment