Thursday, April 11, 2019

সেন পরিবারের অন্নপূর্ণা পূজা


ঐতিহ্যের ইতিহাসপর্বঃ 

 আজ আবারও এক প্রাচীন অন্নপূর্ণা পূজার ইতিহাস তুলে আনলেন বনেদীয়ানা পরিবারের সদস্য শ্রীমান্ শুভদীপ রায় চৌধুরী আজ আলোচনায় মধ্যকলকাতার সেন পরিবারের প্রাচীন অন্নপূর্ণা পূজা সেই প্রাচীন পুজোর ইতিহাস ধারাবাহিকতার কথা বললেন সেই পরিবারের দৌহিত্র বংশের শ্রীমান্ মৈনাক মুখোপাধ্যায় দেখা যাক কিভাবে হয় এই পরিবারের পুজো



 সাল ১৮৯৮-৯৯, পুজোর শুরু করেন পরিবারের পুত্রবধূ শ্রীমতী ভগবতীদেবী ভগবতীদেবী একবার বারাণসীতে ভ্রমণে গিয়েছিলেন, সেখানে অন্নপূর্ণা মন্দির দর্শণ করে তারও ইচ্ছা হয় তার পরিবারেও এই পুজোর শুরু হোক তাই বাড়ি ফিরেই তিনি এই পুজো শুরু করেন সেনভবনে সেই থেকেই এই ঐতিহ্যপূর্ণ পুজো হয়ে আসছে সেন বাড়িতে
 সেনবাড়ির দেবী কুমোরটুলি থেকে এসে পরিবারের দালানে অধিষ্ঠান করেন সেখানেই পুজো পান তিনি।পুজোর আগের দিন দেবীর অধিবাসপর্ব হয় পুজোর দিন সকালে চণ্ডীপাঠ হয় এবং শুরু হয় অন্নপূর্ণা পুজো সেন বাড়ির কুলদেবতা লক্ষ্মীনারায়ণ




 অন্নপূর্ণা পুজোর দিন একদিনেই সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমীপুজো হয় পরের দিন দশমীপুজো হয়ে বিসর্জনপর্ব শুরু হয় পুজোর বিশেষত্ব হল এই পরিবারে ধুনো পোড়ানোর রীতি রয়েছে, রয়েছে ১০৮প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের এছাড়া আরও নানান রকমের রীতি নিয়ম রয়েছে সেন পরিবারে



 সেন পরিবারে দেবীকে নানান ধরনের গয়না পড়ানো হয় দেবীর হাতে রুপোর হাড়ি হাতা দেওয়া হয় এছাড়া সোনার টিপ, সোনার নথ এমনকি মহাদেবের হাতে পেতলের ত্রিশূল দেওয়া হয় ইত্যাদি নানান অলংকারে সাজানো হয় বিগ্রহকে মাকে কলকাতার স্বনামখ্যাত কুমোরটুলি থেকেই আনা হয় প্রতিমাশিল্পীঃ শ্রী মুরারি পাল মহাশয়



  সেন পরিবারের আরও এক রীতি হল বিসর্জনের দিন মহাদেব ভক্তদের ভিক্ষা গ্রহণ করেন পূজার প্রতিষ্ঠিত ঘটে বিসর্জনের আগে মহাদেবকে সমস্ত ভক্তবৃন্দ ভিক্ষা দেন এই পরিবারে দেবীকে অন্নভোগ নয় দেবীকে লুচিভোগই প্রদান করা হয় ভোগে লুচির সাথে থাকে পাঁচ রকমের ভাজা, পায়েস নানান রকমের মিষ্টান্ন ইত্যাদি সেন পরিবারের রীতি হল ব্রাহ্মণ পুরুষই ভোগ রান্না করবেন, তাই নিয়ম মেনেই ব্রাহ্মণ পুরুষ দিয়েই ভোগ রান্না করানো হয়এই ভোগ নিবেদনের সময় পাঁচটি থালায় ২৮টি করে লুচি আর পাঁচ রকমের ভাজা দেওয়া হয়, এই পাঁচটি থালা দেবী অন্নপূর্ণা, মহাদেব, নন্দীমহারাজ, লক্ষ্মী নারায়ণের নামে উৎসর্গ করা হয় দশমীর দিনও একই ভোগ নিবেদন করা হয় পরিবারে কনকাঞ্জলিপথাও রয়েছে দশমীর দিন বিদায়বেলায়



 এইভাবে নিষ্ঠার সাথে প্রায় ১২১বছর ধরে দেবীর আরাধনা হয়ে আসছে মধ্যকলকাতার সেনবাড়িতে
কীভাবে যাবেনঃ
ঠিকানাঃ ১০৬, অখিল মিস্ত্রি লেন(সুরেন্দ্রনাথ কলেজের কাছেই সেনবাড়ি)
কৃতজ্ঞতাস্বীকারঃ শ্রীমান্ মৈনাক মুখোপাধ্যায়
তথ্যসূত্র সংগ্রহেঃ শ্রীমান্ শুভদীপ রায় চৌধুরী



No comments:

Post a Comment