আজ এক ভিন্নধারার রচনায়
শ্রীমান্ শুভদীপ রায় চৌধুরী,
দুইবাড়ির অন্নপূর্ণা পূজার রীতিনীতি নিয়ে
আলোচনা। দুইবাড়িতেই
পূজার বয়স কম হলেও
সেই পূজায় আন্তরিকতা লক্ষণীয়। তাই
দেবীপূজার এই পর্বে আমরা
আলোচনা করলাম সেই দুইবাড়ির
অন্নপূর্ণা পূজার বৈশিষ্ট্যগুলি নিয়ে।
১. বেলঘড়িয়ার দে পরিবারঃএই
পরিবারের পুজো খুবই নবীনপুজো। এবছর
তাদের পুজোর বয়স ৫বছর। পরিবারের
সদস্য শ্রীমান্ তিয়াস দে জানালেন
এই পুজো তারই সূচনায়
সৃষ্টি। বহুদিনের
আশায় তিনি মায়ের পুজো
শুরু করেন তার নিজের
বাড়িতে।
দে
পরিবারের পাশেই এক প্রাচীন
অন্নপূর্ণা পূজা দেখে তার
এমন ইচ্ছার প্রকাশ বলেই
জানিয়েছেন শ্রীমান্ তিয়াস দে মহাশয়। পরিবারের
সদস্যদের কথায় জানা গেল
এই পরিবারের বিশেষ রীতি বলা
যায় ভিক্ষাপর্ব। অর্থাৎ
পূজার শেষে বহু ভক্ত
মহাদেবকে ভিক্ষাদান করেন। চাল,
পাঁচ রকমের ফল, পৈতে
ইত্যাদি নানান উপকরণ দিয়ে
ভিক্ষা দেন বহু ভক্ত। এছাড়া
পরিবারে কুমারিপুজোও রয়েছে।
অন্নপূর্ণা পূজার আগের দিন
সকালে চণ্ডীপাঠ শুরু হয় এবং
বিকালে হয় দেবীর অধিবাসপর্ব। অন্নপূর্ণা
পুজোর দিন সকালে পুজো
শুরু হয়। দে
পরিবারে বলিপ্রথা রয়েছে। এই
পরিবারে চালকুমড়ো, কলা ইত্যাদি বলিদান
করা হয়। দে
পরিবারে দেবীকে অন্নভোগে দেওয়া
হয়- সাদাভাত, পোলাও, খিঁচুড়ি, ভাজা
আটরকমের, ডাল তিনরকমের, কাঁচকলার
কোপ্তা, শুক্তনি, আলুপোস্ত, পটলপোস্ত, ছানার কোপ্তা, ধোকার
তরকারি, ফুলকপির তরকারি, চাটনি, পায়েস, নানান
রকমের মিষ্টান্ন, দই, ডাব ইত্যাদি। দেবীর
সান্ধ্যকালীন ভোগে থাকে লুচি,
ছোলার ডাল, ছানার তরকারি,
মালপুয়া, লাড্ডু ও নানান
মিষ্টান্ন ইত্যাদি। পরেরদিন
দেবীকে পান্তাভাত, কচুরশাক, চালতার চাটনি ইত্যাদি
প্রদান করা হয়।
এই পরিবারে কনকাঞ্জলিপথা রয়েছে। সেই
প্রথার মধ্যদিয়ে দেবী কৈলাশের উদ্দেশ্যে
যাত্রা করেন। গত
চারবছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো
পেয়ে আসছেন দে পরিবারের
দেবী অন্নপূর্ণা। নবীন
পুজো হলেও আন্তরিকতা লক্ষণীয়
এই পুজোয়।
কৃতজ্ঞতাস্বীকারঃ
শ্রীমান্ তিয়াস দে
২. কলকাতার সমাদ্দার পরিবারঃ
এবার আমরা আরও এক
অন্নপূর্ণা পূজার কথা উল্লেখ
করবো এই পর্বে- সমাদ্দার
বাড়ির পুজো।
পুজোর
সূত্রপাত করেন পরিবারের শ্রী
দুলাল চন্দ্র সমাদ্দার ১৯৯১সালে।সেই
পুজো আজ দেখতে দেখতে
প্রায় পনেরো বছর অতিক্রম
করেছে। পরিবারের
সদস্য শ্রীমান্ পৃথ্বী সমাদ্দার বলেন
পুজোর শুরুর পর বেশকিছু
বছর পটে পুজো চলে। তারপরে
পুজো আবার মৃন্ময়ীমূর্তিতে শুরু
হয় সমাদ্দার পরিবারে।
এই পরিবারের মূর্তি
বাড়ির সদস্যই তৈরী করেন। এই
পরিবারে দেবীর সেবাকার্যে কোন
জাতিভেদপ্রথা দেখা যায় না,
সবাই মায়ের কাজ করেন। পরিবারে
দেবীকে অন্নভোগই প্রদান করা হয়। অন্নভোগে
থাকে পোলাও, ভাজা, তরকারি,
চাটনি, পায়েস, মিষ্টান্ন ইত্যাদি। দেবীর
সান্ধ্যকালীন ভোগে থাকে লুচিভোগ,
নানান রকমের মিষ্টান্ন ইত্যাদি। পরের
দিন দেবীকে পান্তাভাত, কচুরশাক
ইত্যাদি প্রদান করা হয়।এই পরিবারে কনকাঞ্জলিপথাও রয়েছে। এইভাবেই
নিষ্ঠার সাথে পুজো হয়ে
আসছে কলকাতার সমাদ্দার পরিবারে।
কৃতজ্ঞতাস্বীকারঃ
শ্রীমান্ পৃথ্বী সমাদ্দার
No comments:
Post a Comment