Thursday, April 11, 2019

ভট্টাচার্য্য পরিবারের অন্নপূর্ণাপূজা


ঐতিহ্যের ইতিহাসপর্বঃ 
 আবার প্রাচীন এক ইতিহাসের সাক্ষীস্বরূপ আমরা বনেদীর সদস্যরা এবার প্রাচীন ভট্টাচার্য্য পরিবারের অন্নপূর্ণাপূজা ইতিহাসের সন্ধান দিলেন পরিবারের নবীন সদস্য শ্রীমান্ সৌভিক ভট্টাচার্য্য আজ আলোচনা করলেন সেই ইতিহাস শ্রীমান্ শুভদীপ রায় চৌধুরী পুজোর ইতিহাস বা কীভাবে পুজো হয় ভট্টাচার্য্য পরিবারে এবার দেখা যাক

 এই ভট্টাচার্য্য পরিবারে ১৭৬১ সালে প্রথম শুরু হয় অন্নপূর্ণা পূজা, যদিও পরিবারের সদস্যরা মনে করেন যে বাংলাদেশে থাকাকালীন সময়েই এই পুজো শুরু হয়ে গিয়েছিল সেই পুজো পরবর্তীকালে বসতবাড়ি যখন দক্ষিণ কলকাতার মুদিয়ালির অঞ্চলে শুরু হয় ১৯৭১ সালে কীভাবে পুজোর শুরু তার ইতিহাস এখনও জানা যায় নি তবে তার খোঁজ চালাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা আর আজ আমরাও শুরু করলাম সেই ইতিহাস খোঁজের মা অন্নপূর্ণার নিত্য সেবাপুজো হয় এই পরিবারে পরিবারের পুর্বপুরুষ শ্রী কাশীশ্বর ভট্টাচার্য্য অন্নপূর্ণা পূজার পরই স্বপ্নাদিষ্টে শালিগ্রাম এবং অষ্টধাতুর রাধামাধব লাভ করেন
 ভট্টাচার্য্য বাড়ির পুজোয় আগে বলিদানের প্রথা থাকলেও পরবর্তীকালে সেই বলিদান প্রথা বন্ধ করে দেওয়া হয় বিভিন্ন ধরনের গয়না পড়ানো হয় দেবীকে এবং বাড়ির পুরুষ সদস্যরাই এই অলংকার পড়ান দেবীকে দেবীকে সোনার মুকুট, সোনার রত্নহার, কানে সোনার কানপাসা, সোনার টিপ, সোনার বালা, পায়ের নূপুর আর মহাদেবের রুপোর চাঁদ, রুপোর বিল্বপত্র, মায়ের হাতে রুপোর হাড়ি এবং হাতা ইত্যাদি নানান রকমের অলংকারে সাজানো হয় আজও নিষ্ঠার সাথে পূজিতা হন দেবী

 ভট্টাচার্য্য পরিবারে দেবীকে অন্নভোগই প্রদান করা হয় ভোগে থাকে ঘিভাত, খিঁচুড়ি, পাঁচ রকমের ভাজা, পাঁচমিশালী তরকারি, কই মাছের ঝাল, চাটনি, পায়েস, নানান রকমের মিষ্টান্ন, পান ইত্যাদি নিবেদন করা হয় আগে নারায়ণের ভোগ নিবেদন হয় তারপর মায়ের ভোগ নিবেদন হয়  ভোগ রান্না করেন পরিবারের বড় পুত্রবধু, এই নিয়ম ভট্টাচার্যদের সন্ধ্যায় দেবীকে সমস্ত ধরনের মিষ্টান্ন আর ফল দেওয়া হয় আগে গঙ্গাজল দিয়েই রান্না হত কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেই নিয়ম আজ অবলুপ্ত
 নিয়ম নিষ্ঠার সাথে ঐতিহ্যকে ধরে রেখে চলেছে পরিবারের বর্তমান সদস্যরাও একসাথে মেলবন্ধনের মাধ্যমেই পুজোর সমস্ত নিয়ম পালন করা হয় বলে উল্লেখ করেছেন শ্রীমান্ সৌভিক বাবু তান্ত্রিক মতে পুজো হয় দেবীর অন্নপূর্ণা পুজোর দিন একদিকে পুজোপাঠ চলে আর একদিকে চণ্ডীপাঠ হয়
 অন্নপূর্ণা পূজার দিন বিকালে আরতির পর সঙ্গীতের মূর্চ্ছনার মাধ্যমে প্রতিটি সদস্য এবং সদস্যা মায়ের আরাধনা করেন সবথেকে বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এই পরিবারে মায়ের মূর্তি একবছর তাদের মন্দিরে থাকেন এবং পরের বছর সেই মূর্তির বিসর্জন হয়  এইভাবে নিষ্ঠার সাথে  ২৫৮ বছরে পদার্পণ করবে এই ভট্টাচার্য্য পরিবারের পুজো ধারাবাহিকতার এক উদাহরণ তুলে ধরলাম আজ
কৃতজ্ঞতাস্বীকারঃ শ্রীমান্ সৌভিক ভট্টাচার্য্য
তথ্যসংগ্রহেঃ শ্রীমান্ শুভদীপ রায় চৌধুরী


No comments:

Post a Comment